বিক্ষোভকারী কৃষকরা "আমাদের অন্নদাতা" এবং তাদের অপরাধী হিসাবে গণ্য করা যায় না” কৃষক আন্দোলনের মাঝেই মুখ খুলে কেন্দ্রের রনংদেহি মনোভাবের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন কৃষি বিজ্ঞানী এমএস স্বামীনাথনের মেয়ে মধুরা স্বামীনাথন।
তিনি এক অনুষ্ঠানে ভাষণ কালে বলেন, “ পাঞ্জাবেরকৃষকরা দিল্লির দিকে মিছিল করছেন । সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুসারে, হরিয়ানায় তাদের জন্য জেল তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে ব্যারিকেড দেওয়া রয়েছে, তাদের ঠেকানোর জন্য সব রকমের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এরা কৃষক, এরা অপরাধী নয়”।
তিনি কৃষকদের প্রতি কেন্দ্রের এমন কঠোর মনোভাবের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে তিনি বলেন, “আমাদের অন্নদাতাদের সাথে কথা বলতে হবে, আমরা তাদের অপরাধী হিসাবে গন্য করতে পারি না। আমাদের সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আমার অনুরোধ এমএস স্বামীনাথনকে যদি সম্মান করতেই হয় তবে আমরা ভবিষ্যতের জন্য যে কৌশল পরিকল্পনা করছি তা বাস্তবায়িত করতে হবে”।
IARI-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর আরবি সিং বলেন, এমএস স্বামীনাথন এমএসপির সূত্র তৈরি করেছিলেন এবং এর বাস্তবায়নের জন্য দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করেছিলেন।
কৃষকদের অবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন ডঃ স্বামীনাথন: সৌম্য
ডক্টর এমএস স্বামীনাথনের দ্বিতীয় কন্যা সৌম্য স্বামীনাথন, যিনি ডব্লিউএইচও-এর প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞানী, তিনিও এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। সৌম্য বলেছিলেন যে তার বাবা কৃষি এবং কৃষকদের, বিশেষত ছোট কৃষকদের কল্যাণের কথা চিন্তা করেছেন। এর পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও জনজাতি জনগোষ্ঠীর প্রতিও ছিল তাঁর গভীর সহানুভূতি। সৌম্য বলেন, “আমাদের জন্য যারা খাবার জোগান দেন। তারা নিজেরাই সুস্থ ও সমৃদ্ধ জীবনযাপনের সুযোগ পায় না, এই ভেবে বাবা সবসময় দুঃখ পেতেন”।
সৌম্য স্বামীনাথন আরও বলেন, “তিনি এমন অনেক সমস্যা আগে থেকেই অনুমান করতেন, যা ভবিষ্যতে আরও বড় আকার নিরে পারে এবং সেগুলির সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করতেন। এই কারণেই তিনি ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে কথা বলছিলেন”।
সৌম্য স্বামীনাথন স্মরণ করেছিলেন যে তার “বাবার বাড়ি বা অফিসে একটি 'ওপেন ডোর পলিসি' ছিল, যার মধ্যে যে কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বলতে কোন দ্বিধা ছাড়াই তাঁর কাছে আসতে পারতেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপচারিতা করতে পছন্দ করতেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে এই শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতে সমস্ত সমস্যার সমাধান করবে”।
IARI-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর আরবি সিং বলেছেন যে এমএস স্বামীনাথন শুধুমাত্র এমএসপি ফর্মুলা তৈরি করেননি বরং এর বাস্তবায়নের জন্য দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করেছিলেন। জাতীয় কৃষক কমিশনে ডঃ স্বামীনাথনের সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেছিলেন যে তিনিই প্রথম কৃষকদের জন্য নীতি তৈরি করেছিলেন। আরবি সিং বলেছেন, 'অনেক কৃষি নীতি রয়েছে, কিন্তু লাঙ্গল চাষীদের জন্য কোনও নীতি ছিল না... স্বামীনাথন কমিশন ন্যূনতম সমর্থন মূল্য গ্রহণের দৃঢ় পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন যে ডঃ স্বামীনাথন, যিনি সবুজ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন দরিদ্রপন্থী, নারীপন্থী। মাত্র কয়েকদিন আগে, সরকার ডক্টর এমএস স্বামীনাথন, চৌধুরী চরণ সিং এবং পিভি নরসিমা রাওকে ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণা করেছে।