প্রথম থেকেই মমতা সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল ধনকড়ের সম্পর্ক ভালো নয়। এবার সেই বিরোধ গড়াল রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের অপসারণ দাবি করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার তৃণমূল ভবনে এই খবর জানান দলের রাজ্যসবার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। সংবিধানের ১৫৬ (১) ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতিকে তাঁর সম্মতি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে তৃণমূল। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে তৃণমূলের স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি সাংসদের।
রাজ্যপালের ধনকড়ের বিরুদ্ধে সাংবিধান বর্ণিত সীমারেখা লঙ্ঘন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাকে না মানা সহ একাধিক অভিযোগ তুলে ৬ পাতার স্মারকলিপিতে রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর অপসারণ দাবি করা হয়েছে বলে জানান সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেন, 'দায়িত্বে আসার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল লাগাতার রাজ্য সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করে চলেছেন। সাংবিধানিক রীতিনীতি মানছেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাও লঙ্ঘন করছেন। যখন-তখন টুইট করে রাজ্য মন্ত্রিসভার সমালোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। বিধানসভার স্পিকারে সমালোচনাকরছেন। রাজ্যপালের ভূমিকা সংবিধান বিরোধী।'
আইন-শৃঙ্খলা থেকে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা, দুর্গাপুজো কার্নিভালে অপমান, রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ইস্যুতে রাজ্যপালের কাঠগড়ায় তৃণমূল সরকার ও রাজ্যের শাসক দল। বাংলার বেহাল অবস্থার জন্য প্রায়শই টুইট করে পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সরকারকে দায়ী করেন জগদীপ ধনকড়। সম্প্রতি বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলা ইস্যুতেও রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। সবমিলিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় শাসক দল বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান হলেও রাজ্যপালের ভূমিকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ জোড়া-ফুল শিবিরের।
তৃণমূলের দাবি, সংবিধান অনুসারে রাজ্যপাল কেবল রাজ্য সরকারের মাধ্যমে নিজের কর্তব্য পালন করতে পারেন। যে কোনও আপত্তি তিনি রাজ্য সরকারকে জানাতেই পারেন। কিন্তু তাঁর প্রকাশ্যে মন্তব্য করার কোনও অধিকার নেই। কিন্তু নিজের সাংবিধানিক সুরক্ষাকবচ ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধেই লাগাতার মুখ খুলছেন তিনি। কখনও কখনও পুলিশকে রাজ্যপাল কার্যত হাঁশিয়ারিও দিচ্ছেন। যা বেনজির।
ভোটের আগে বঙ্গ রাজনীতির উত্তাপ বাড়ছে। বাড়লো রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের বিবাদও।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন