মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং দীর্ঘদিনের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমলনাথের বিজেপিতে সম্ভাব্য যোগদান নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা। সাম্প্রতিক রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে পরাজিত করেছে বিজেপি। এবার কমলনাথ যদি বিজেপিতে যোগ দেন, তবে তা হবে কংগ্রেসের কাছে এক বিরাট ধাক্কা। মাত্র কয়েকদিন আগেই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা অশোক চৌহান দল ছেড়ে পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছেন। এভাবে লোকসভার আগে একের পর দাপুটে কংগ্রেস নেতার দল ছাড়ায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ছে গ্র্যাণ্ড ওল্ড পার্টি।
দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা এই জল্পনার মাঝেই মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, বিজেপির কাছে কংগ্রেসের দুটি উইকেট ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। “একটি, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহান। এবার যদি পদ্মে কমল বিকশিত হয়, তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে নিশানা করা বিজেপির পক্ষে আরও সহজ হয়ে যাবে। একটি সাফ বার্তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছাবে যে কংগ্রেস এতটাই ভেঙে পড়েছে যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদেরও ধরে রাখতে পারছে না। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শক্তি বিজেপিকে নিঃসন্দেহেই ভোটের আগে অতিরিক্ত মাইলেজ দেবে"।
বিজেপি নেতারা আশা করছেন, বিজেপি জাতীয় কাউন্সিলের বৈঠকের পরেই কমলনাথ বিজেপিতে যোগ দেবেন। বিশেষ করে মধ্যপ্রদেশের কথা উল্লেখ করে, বিজেপির একজন রাজ্য নেতা বলেছিলেন যে কমল নাথ তার ঘাঁটি ছিন্দওয়াড়া থেকে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীদের নিয়েই বিজেপিতে যোগ দেবেন। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি জব্বলপুর এবং আরও কয়েকটি জায়গার তাঁর অনুগামীরাও বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হবেন"।
রাজ্য বিজেপির একটি সূত্র দাবি করেছেন মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সব সময় তিনটে থেকে চারটি লবি কাজ করত। এখন প্রয়াত অর্জুন সিংয়ের উত্তরাধিকার ম্লান হয়ে গিয়েছে। দিগ্বিজয় সিং তার হিন্দুত্ববাদী মন্তব্যের কারণে "সাধারণ হিন্দুদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন"। সিন্ধিয়া ইতিমধ্যেই বিজেপিতে রয়েছেন। এখন কংগ্রেসের নেতা বলতে স্রেফ কমল নাথ। তিনিও এখন দল ছেড়ে গেলে কংগ্রেসের আর কোন অস্তিত্ব থাকবে না রাজ্যে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জন্য যা হবে ফাঁকা মাঠে গোলের সামিল"।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজেপির একজন প্রবীণ সাংসদ বলেছেন, "সাম্প্রতিক নির্বাচনে পরাজয়ের পর তার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে টিকিয়ে রাখার একমাত্র উপায় বিজেপিতে যোগ দেওয়া। এছাড়া কমলনাথের কাছে আর কোন বিকল্প ছিল না। তার ছেলে বা পুত্রবধূর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে এর থেকেভাল সুযোগ কমল নাথের কাছে আর কিছু নেই"।
বিধানসভা নির্বাচনের সময়, 'দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে, কমল নাথ বলেছিলেন রাম মন্দির নির্মাণে কংগ্রেসের কৃতিত্ব নেহাতই কম নয়। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাজীব গান্ধীর অধীনেই বাবরি মসজিদের তালা খোলা হয়েছিল এবং তিনি ভিএইচপিকে মন্দিরের শিলান্যাস করার অনুমতিও দিয়েছিলেন, কমল নাথ বলেছিলেন, বিজেপি রাম মন্দির নিয়ে এককভাবে কৃতিত্ব দাবি করতে পারে না'।