পাঁচ বছরের জন্য সরকার গঠন হয়েছে ২০১৯ সালে। মোটে পেরিয়েছে আড়াই বছর। ইতিমধ্যেই তুঙ্গে পৌঁছে গিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকারে কাজিয়া। কংগ্রেসের মন্ত্রীরা বারবার দিল্লিতে দলের হাইকমান্ডের কাছে অভিযোগ করছেন, তাঁরা এনসিপি আর শিবসেনার থেকে উপযুক্ত সম্মান পাচ্ছেন না। তার মধ্যেই আবার মুখ্যমন্ত্রী পদ দখলের স্বপ্ন দেখছে এনসিপি।
আর, যে কেউ নন। খোদ এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেরও প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে এই স্বপ্ন দেখা নিয়ে। গত ৪ জুন এনসিপির মন্ত্রী ধনঞ্জয় মুন্ডে বিদের সভায় বলে বসেছেন, 'মহারাষ্ট্রে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী এনসিপি থেকেই কেউ একজন হবেন।' এই বক্তব্যের বিরোধিতা করার বদলে, সুলে বলেছেন, 'এটা নতুন কিছু না। প্রত্যেক দলেরই এমন স্বপ্ন থাকে।'
যদিও মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসকে নিয়ে মহাবিকাশ আগাড়ি (এমভিএ) জোট গঠনের সময়ই সেনা শর্ত দিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন উদ্ধবই। সুলের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পালটা মন্তব্য করেছেন উদ্ধব ঘনিষ্ঠ শিবসেনা নেতা তথা দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। তিনি জানিয়েছেন, 'মুখ্যমন্ত্রী পদে বদলের কোনও প্রশ্নই নেই। পুরো সময় এবং তার পরেও উদ্ধব ঠাকরেই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন।'
পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে মুখ খুলেছে এনসিপিও। শরদ পাওয়ারের হয়ে মুখ খুলেছেন প্রবীণ এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়ালসে পাতিল। তিনি গোটা পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছেন। পাতিল বলেছেন, 'পুরো পাঁচ বছর উদ্ধব ঠাকরেই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে কোনও কথা হয়নি।'
মহারাষ্ট্রের রাজনৈতির মহল সূত্রে খবর, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার আগাগোড়াই এই জোট সরকার বজায় রাখার পক্ষে। তিনিই আসলে জোট সরকারের মাথা। উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী হলেও প্রয়োজনে তাঁর পরামর্শ নিয়েই কাজ করেন। পাওয়ারই কংগ্রেসের সঙ্গে শিবসেনার জোট গঠনে মূল কারিগরের ভূমিকা পালন করেছিলেন।
আরও পড়ুন- আরএসএসের নির্দেশিত পথে চলেননি, তাই সাসপেন্ড নুপুর শর্মা?
২০১৯ সালের নির্বাচনে ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপি একক বৃহত্তম দল হিসেবে পেয়েছিল ১০৫টি আসন। শিবসেনা পেয়েছিল ৫৬টি। কংগ্রেস ৫৪টি। আর কংগ্রেস ৪৪টি আসন। শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির জোট ভেঙে গিয়েছিল। কারণে, সেনা দাবি করেছিল, আড়াই বছর বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি আড়াই বছর সেনার মুখ্যমন্ত্রী থাকবে। কিন্তু, এই শর্তে বিজেপি রাজি হয়নি।
বর্তমান মহারাষ্ট্র সরকারে সবচেয়ে বেশি ক্যাবিনেট মন্ত্রী রয়েছে এনসিপির। তাদের ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সংখ্যা ১২। পাশাপাশি রয়েছে ৪ জন রাষ্ট্রমন্ত্রীও। উপমুখ্যমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্র, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব দখলে রয়েছে এনসিপির। শিবসেনার আছে মুখ্যমন্ত্রিত্ব। সবমিলিয়ে ১০ জন ক্যাবিনেট এবং ৪ জন রাষ্ট্রমন্ত্রী। আর, কংগ্রেসের আছে ১০ জন ক্যাবিনেট এবং ২ জন রাষ্ট্রমন্ত্রী।
Read full story in English