উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের 'গৌরব যাত্রা' একেবারে ম্যাড়মেড়ে ভাবেই শুরু হল। দল এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। একের পর এক নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছে। দলনেত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিয়াঙ্কা গান্ধী করোনায় আক্রান্ত। সেই সবই যেন ফুটে উঠল এই জৌলুসহীন 'গৌরব যাত্রা'য়। সামনেই আরও একটা স্বাধীনতা দিবস। সেই উপলক্ষে এই 'গৌরব যাত্রা'র আয়োজন করেছে দল। নির্দেশ দিয়েছে 'গৌরব যাত্রা' করতে হবে। নির্দেশ মানতে হয় বলেই যেন মানা। তবে, তাতে কোনও যেন প্রাণ নেই।
কংগ্রেস নেতাদের অবশ্য বক্তব্য, মহরমের জন্য যাত্রার প্রথম দিনে দলের বহু কর্মী যোগ দিতে দেননি। যাত্রা যতই এগোবে, ধীরে ধীরে কর্মীসংখ্যা বাড়বে। যা চূড়ান্ত রূপ নেবে ১৫ আগস্টে। কংগ্রেস নেতৃত্ব আরও জানিয়েছেন, প্রতিবার 'গৌরব যাত্রা'য় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতেন। নির্বাচন হোক বা অন্য বড় অনুষ্ঠান, উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে কর্মীরা সঙ্গে পেতেন। এবার অসুস্থ থাকায় তিনি নেই। প্রদেশ নেতৃত্বই যা সামলানোর সব সামলাচ্ছেন। এখন প্রিয়াঙ্কার বদলে উত্তরপ্রদেশের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানান এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক দলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি।
তার ওপর মার্চে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অজয় কুমার লাল্লু পদত্যাগ করেছেন। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বিপর্যয়ও ঘটেছে। তার জেরে সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার কাজ হয়নি। তারই প্রভাব পড়েছে 'গৌরব যাত্রা'য়। এমনটাই মত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বর্তমানে গোটা উত্তরপ্রদেশে সংগঠনকে ছ'টি জোনে ভাগ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি, আপাত পরিস্থিতি সামলাতে একজন কার্যনির্বাহী প্রদেশ সভাপতি নিয়োগের কথাও জানিয়েছে। কিন্তু, সূত্রের খবর এই কার্যনির্বাহী প্রদেশ সভাপতি হতে দলের বেশিরভাগ প্রবীণ নেতাই আগ্রহী নন।
আরও পড়ুন- বিহারে ফের ‘চাচা-ভাতিজা’র সরকার! রেকর্ড ৮ বার মুখ্যমন্ত্রী হলেন নীতীশ, দ্বিতীয়বার ডেপুটি তেজস্বী
এই ব্যাপারে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, 'উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব নিতে পারেন, এমন প্রবীণ কংগ্রেস নেতার অভাব নেই। কিন্তু, অজয় কুমার লাল্লুর পরিস্থিতি দেখে আর কেউ সাহস পাচ্ছেন না। তাঁকে শুধু সভাপতি পদ থেকে অপসারণই করা হয়নি। তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারও শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ, লাল্লুর মাথায় কিছু অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে তাঁদের কথা শুনে চলতে হয়েছে। এখন যাঁদেরই দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, প্রত্যেকে কিছু না-কিছু শর্ত দিচ্ছেন। তাঁরা দায়িত্ব নিতে রাজি। কিন্তু, মাথায় অরাজনৈতিক কাউকে বসানো চলবে না। এটাই তাঁদের শর্ত।'
Read full story in English