আগামীকাল ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে ১৪ দলের নেতারা অংশ নেবেন। এই বৈঠকে অংশ নেবেন শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে, এম কে স্ট্যালিন, নীতীশ কুমার সহ ১৪টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকে হাজিরা এড়াল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে জানানো হয়েছে তারা বৈঠকে অংশ নেবে না। এই সপ্তাহের শুরুতে, দলের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ২-৩টি আসন তারা কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি। যদিও রাজ্য কংগ্রেস ইতিমধ্যে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
দলের একটি সূত্র জানিয়েছে যে চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে যোগ দেবেন না। কারণ তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। পাশাপাশি দলীয় সূত্র জানিয়েছে "আমাদেরকে বিকেল ৫টা নাগাদ বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়েছে। আগামীকাল সকাল সাড়ে এগারোটায় বৈঠক শুরুর কথা। আমরা কংগ্রেসকে বলেছিলাম যে আগামী সপ্তাহে বৈঠক হলে তিনি যোগ দিতে পারেন,। এত স্বল্প সময়ের নোটিসে মিটিংয়ে যোগ দিতে পারবেন না, দলনেত্রী”। যদিও কংগ্রেস বৈঠকের এজেন্ডা প্রকাশ করেনি।
লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে, বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে রণকৌশল নির্ধারণে আগামীকাল ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধিরা এক বৈঠকে অংশ নিতে চলেছেন। সূত্রের খবর, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জেডিইউ সভাপতি নীতীশ কুমারকে বৈঠকের আহ্বায়ক করা হতে পারে পাশাপাশি কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গেকে জোটের সভাপতি করা হতে পারে। বিরোধী জোটের বেশিরভাগ দলই নীতিশ কুমারকে জোটের আহ্বাতক করার বিষয়ে একমত, তবে মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি এখনও এই বিষয়ে কিছু বলেননি।
শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিরোধী জোট ভারতের বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বৈঠকে আসন বন্টন চূড়ান্ত করতে আলোচনা হতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেস নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে। জোট কমিটি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা, শরদ পাওয়ারের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি, আরজেডি এবং সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠক করেছে। যদিও তৃণমূলের সঙ্গে এখনও কোনো আলোচনা হয়নি। বৃহস্পতিবার সূত্র জানিয়েছিল যে TMC কংগ্রেসকে ৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২টি আসনের প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও টিএমসির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে কংগ্রেস।
TMC-র একটি সূত্র শুক্রবার জানিয়েছে যে তারা বাংলায় ৩টি আসন কংগ্রেসকে দিতে প্রস্তুত, তবে এর জন্য অসমে দুটি এবং মেঘালয়ে একটি আসনের দাবি জানিয়েছে দল।
বিরোধী জোট এ পর্যন্ত চারটি বৈঠক হয়েছে। ২৩ জুন বিহারের পাটনায় এর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় বৈঠকটি ১৭ এবং ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তৃতীয় বৈঠকটি ১ সেপ্টেম্বর মুম্বইতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ডিসেম্বরে দিল্লিতে চতুর্থ বৈঠক হয়।
বৈঠকে ওয়ান টু ওয়ান ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। নীতীশ কুমার ইতিমধ্যেই বলে আসছেন যে বিজেপির বিরুদ্ধে একজন বিরোধী প্রার্থী দেওয়া উচিত। শনিবার বৈঠকে এ নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে। আসন বণ্টন এখনো হয়নি। এ কারণে যত দ্রুত সম্ভব আসন বণ্টনের দাবি জানাচ্ছে দলগুলো।
নীতীশ কুমারকে ভারত জোটের আহ্বায়ক করার প্রস্তাবকে সমর্থন করছে লালু যাদবের দল। তেজস্বী যাদবও বহুবার এই কথা বলেছেন। যদিও জেডিইউ প্রথম দিন থেকেই বলে আসছে যে নীতীশ কুমারকে জোটের আহ্বায়ক করা উচিত। শনিবারের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে ছাড়াও, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, আরজেডি প্রধান লালু যাদব এবং তেজস্বী যাদব, উদ্ধব ঠাকরে এবং সঞ্জয় রাউতও ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেবেন। এই বৈঠকে জেডিইউ প্রধান এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও যোগ দিতে পারেন। সূত্রের খবর শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ভার্চুয়াল বৈঠকে JDU জাতীয় সভাপতি নীতীশ কুমারকে এই জোটের আহ্বায়ক হিসাবে ঘোষণা করা হতে পারে।