মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে। লিগামেন্ট, টিস্যুতেও চোট লেগেছে। এসএসকেএম সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসবার সাংসদ ডা. শান্তনু সেনও পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে বলে জানিয়েছেন। এই ধরনের চোট-আঘাতে সাধারণত ৬-৮ সপ্তাহ বিশ্রামে থাকার প্রয়োজন হয়। মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে পায়ে প্লাস্টার করতেও হতে পারে বলে মনে খবর।
বুধবার রাত পৌনে ন'টা নাগাদ নন্দীগ্রাম থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় পৌঁছয় এসএসকেএম-এ। স্ট্রেচারে করে আহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর নানা শারীরিক পরীক্ষা হয়। তারপরই জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর এসএসকেএম-এ ভর্থির কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁকে দেখেই হাসপাতাল চত্বরে উপস্থিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা 'গো ব্যাক' স্লোগান দিতে থাকেন। রাজ্যপালের বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও একই ধ্বনি ওঠে। এদিন রাতে এসএসকেএম-এ ছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
মুখ্যযমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য পাঁচ চিকিৎসককে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। হার্ট-মেডিসিন-অর্থপেডিক সহ নানা বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মমতার চিকিৎসা করছেন। ভিভিআইপিদের জন্য বরাদ্দ এসএসকেএম-এর সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।
বুধবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে আহত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পায়ে ও কপালে গুরুতর চোট লেগেছে। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। তাই সেখানে থাকার পরিকল্পনা বাতিল করে তড়িঘড়ি চিকিৎসার জন্য আহাত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রাম থেকে কলকাতায় আনা হয়।
এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নন্দীগ্রামের একাধিক মন্দিরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলের দিকে রানিবাঁধের একটি মন্দিরে হরিনাম এবং সংকীর্তন শুনতে যান। জানা গিয়েছে, তিনি যখন মন্দির থেকে বেরোচ্ছিলেন, তখন ভিড়ের মধ্যে থেকে ধাক্কা দেওয়া হয় তাঁকে। তাতেই মমতা মুখ থুবড়ে পড়ে যান মমতা। বাঁ-পায়ে আঘাত লাগে তাঁর। কপালেও চোট লাগে।
নন্দীগ্রামে ভাড়া বাড়ির ফেরার পথে মাঝরাস্তায় অসুস্থ বোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পা ফোলা ছিল। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। গোটা ঘটনা 'চক্রান্ত' বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে সংবাদ মাধ্যমে বলেন, 'আমি গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে নমস্কার করছিলাম। তখন চার-পাঁচজন লোক আচমকা দরজা বন্ধ করে দেয়। পায়ে পুরো আটকে গিয়েছিল। পা পুরো ফুলে গিয়েছে। অনেক মানুষ ছিলেন। কিন্তু তাঁরা করেননি। এটা চক্রান্ত হয়েছে। পুলিশ সুপার বা কোনও লোকাল পুলিশ কর্মী ছিলেন না। আমার বুকে ব্যথা হচ্ছে।'
গোটা ঘটনা নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ আকারে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, খবর জানাজানি হতেই পদক্ষেপ করেছে কমিশন। জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন। আগামী ২৪ ঘন্টারসপ্তাহের মধ্যেই তা জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিনের ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন