Advertisment

দলবদলের প্রতিযোগিতায় বিতর্ক গেরুয়া শিবিরে

এরাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে হলে অন্য দল ভাঙিয়ে আনতে হবে, তা ভাল করেই জানেন বিজেপি নেতৃত্ব। কার নেতৃত্বে বেশি নতুন সদস্য যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে, চলছে সেই প্রতিযোগিতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়। ফাইল ছবি: পার্থ পাল।

তৃণমূল কংগ্রেসে থাকার সময়ই বিরোধী নেতৃত্ব ভাঙিয়ে নিয়ে আসা অভ্যাসে পরিণত করেছিলেন তৎকালীন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। এরাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ইএম বাইপাসের ধারে দলের সদর দপ্তরে "জয়েনিং"-এর জন্য সাংবাদিক বৈঠক হয়েছে নজীরবিহীন ভাবে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরও "জয়েনিং" প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন মুকুল। কিন্ত তাঁকে দলবদলের রাজনীতিতে টেক্কা দিতে চাইছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই প্রতিযোগিতা নিয়েই দলে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisment

রবিবার বিগ বাজারের ৬০০ কর্মী যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। মুকুল নেতৃত্বে এই কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। মুকুলের দাবি, "এই কর্মীরা বিজেপির ট্রেড ইউনিয়নের শক্তি বৃদ্ধি করবেন। ভবিষ্যতে আরও অনেকেই যোগ দেবেন বিজেপিতে।" তিনি নিজে গেরুয়া বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ মুকুলবাবুর নেতৃত্বে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের অনেকে ইতিমধ্যে বিজেপির নানা পদের দায়িত্বও পেয়েছেন। এবং দলে যোগ দিয়েই দায়িত্ব পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আদি গেরুয়া বাহিনীর সদস্যরা।

আরও পড়ুন- কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ‘মোদী’র দাবি, আচ্ছে দিন আর আসবে না!

BJP mukul বিগ বাজারের কর্মীরা যোগ দিলেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠনে

রবিবার বিগ বাজারের পর সোমবার কয়েকজন আইনজীবী যোগ দিলেন বিজেপিতে। দলের রাজ্য দপ্তরে এদিন ২০১৬ বিধানসভার শ্যামপুকুরের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আইনজীবী পিয়ালী পালের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে যোগ দিলেন আইনজীবী উমাশঙ্কর পাল। দিলীপ ঘোষ বলেন, "বাংলার উন্নয়নের জন্য ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।"

দলবদলের এই খেলা যে নতুন, তা একেবারেই নয়। কিন্তু এই নিয়ে যে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে মুকুল ও দিলীপ গোষ্ঠীর মধ্যে, তা নিয়েই বিজেপিতে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। দলের একাংশের বক্তব্য, "কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নম্বর বাড়ানোর দিকেই মনোযোগ রয়েছে। অন্য দল থেকে যে যতজন ভাঙিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন, তাঁর কদর তত বাড়বে।" ওই অংশ মনে করছে, দলবদলের অনুষ্ঠানে শীর্ষ নেতৃত্ব একসঙ্গে হাজির থাকলে দলীয় ঐক্যের বার্তা দেওয়া সহজ হত। কিন্তু পৃথকভাবে দলবদল হওয়ায় ভুল বার্তা যাচ্ছে সর্বত্র। এতে অন্তর্কলহের চিত্রই স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অভিজ্ঞ মহলের মতে, "লোকসভার ভোট যত এগিয়ে আসবে, তত এই বদলের খেলা বাড়বে।"

আরও পড়ুন-কাঠগড়ায় বরকতি, টিপু সুলতান মসজিদে একাধিক অবৈধ বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ

BJP cover ফরওয়ার্ড ব্লকের ২০১৬ বিধানসভার প্রার্থী যোগ দিলেন বিজেপিতে

দলে যোগ দিলেই পদ দিতে হবে, এই নিয়ে কিন্তু বিজেপির পুরোনো কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। দলের একাংশের বক্তব্য, "দুর্দিনে দল করেছি। এখন কেউ দলে ঢুুকেই ভাল পদ পেয়ে যাচ্ছেন, তা ঠিক হচ্ছে না।" তবে ঘনিষ্ঠ মহলে মুকুল রায় বরাবরই বলে এসেছেন, "কেন কেউ তাঁর দল ছেড়ে নতুন কোনও দলে যোগ দেবেন? সেক্ষেত্রে তাঁকে কিছু সুুবিধে দিতেই হবে। এটাই সাধারণ নিয়ম।" যেমন মুকুলের আমলে বিরোধী দল থেকে যোগ দিয়ে অনেকেই তৃণমূলের সাংসদ হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- রথের চাকায় পিষতে চাওয়া লকেটকে প্রশাসনিক পদক্ষেপের হুমকি পার্থর

অন্যদিকে, বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা কর্মসূচি একইসঙ্গে প্রচারিত হচ্ছে গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচি নামেও। এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "এখন পর্যন্ত আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচির অনুমতি পাইনি। প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে অনুমতির জন্য প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব। আমাদের নানা কর্মসূচিতে রাজ্য প্রশাসন অনুমতি দিচ্ছে না। এর আগেও আদালতের অনুমতি নিয়ে অনেক প্রোগ্রাম করতে হয়েছে।"

bjp
Advertisment