বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় গিয়ে গেরুয়া শাসনকেই তুলোধনা করলেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে 'অগণতান্ত্রিক-ফ্যাসিবাদী' সরকার চলছে বলে তোপ ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিকে ত্রিপুরায় আইপ্যাক কর্মীদের আটকে রাখার ঘটনাকে যখন বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের হাতিয়ার করতে মরিয়া জোড়া-ফুল শিবির তখন মহামারি আইনে সংস্থার ২৩ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ। কোভিডবিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে ওই ২৩ জনের বিরুদ্ধে। ১লা অগাস্ট অভিযুক্তদের থানায় তলব করা হয়েছে।
গত সোমবার ত্রিপুরায় আটকে দেওয়া হয় প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের কর্মীদের। হোটেল থেকে তাঁদের বেরতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও দলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য নেতাকে ত্রিপুরায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মঙ্গলবার ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় আগরতলা পৌঁছোন। কথা বলেন আইপ্যাকের কর্মীদের সঙ্গে। আপাতত তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের প্রতিনিধিরা নিশানা করেন বিপ্লব দেব সরকারকে।
বাংলার শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু এদিন বলেন, 'করোনা রিপোর্ট নেগেটিভের পরও যেভাবে আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের আটকে রাখা হয়েছে তাতে স্পষ্ট ত্রিপুরায় 'স্বৈরাচারী-অগণতান্ত্রিক' শাসন চলছে। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস উদ্বিগ্ন। হয়তো আইপ্যাকের কর্ণধার পিকে বলেই এই ধরণের হেনস্থা করছে বিজেপি সরকার।' আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠকে বুধবার ব্রাত্য বসুর দাবি, 'বিজেপি সরকার ভয় পেয়েছে। এ রাজ্যের মানুষ ওদের পাশে নেই তা বুঝতে পেরেছে। ত্রিপুরা থেকে কংগ্রেস প্রায় অবলুপ্ত, বামেরাও ক্ষয়িষ্ণু। বাংলার মতো ত্রিপুরাতাও এবার বিজেপির সঙ্গে সম্মুখ সমরে তৃণমূল। ক্রমেই এ রাজ্যে তৃণমলের সংগঠন শক্তিশালী হচ্ছে। সেই ভয় থেকেই পিকের সংস্থার কর্মীদের আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।'
এ রাজ্যের মন্ত্রীর অভিযোগ, সদ্য সমাপ্ত বিধানসবায় বাংলায় রোজই ভিন রাজ্য থেকে বিজেপি নেতারা প্রচারে এসেছিলেন। তাঁদের জন্যই করোনা বেড়েছে। কিন্তু, মমতা সরকার ওই বভিন রাজ্যের ববিজেপি কর্মীদের আটকাতে মরিয়া ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এভাবে এক রাজ্যের মানুষদের অন্য রাজ্যে প্রবেশ আটকানো যায় না। পিকের সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে ত্রিপুরা সকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বৃহস্পতিবারই আগরতলায় যাওয়ার কথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যেয়ের। প্রয়োজনে সেখানে যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আসবেন। সাংবাদিক বৈঠকে এই ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্রাত্য বসু।
ইতিমধ্যেই আইপ্যাকের দাবি করেছে যে, সংস্থার কর্মীরা মানুষের সঙ্গে নিছক কথা বলতেই গিয়েছিলেন, আর তাতেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন