আইফোন থেকে তথ্যচুরি হতে পারে..., এমনই এক সর্তকতা ঘিরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান বিরোধী দলের একাধিক নেতা। মঙ্গলবার বিরোধী নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় যোগাযোগ, ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, "সরকার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি এবং আমরা ইস্যুটির মূলে যাব। আমি এটাও যোগ করতে চাই যে দেশে কিছু সমালোচক আছেন যাদের সমালোচনা করার অভ্যাস আছে। প্রতিটি ইস্যুতে তারা সমালোচনা করতে ছাড়েন না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না,” । তিনি যোগ করেছেন যে অ্যাপল ১৫০ টি দেশে এই পরামর্শ জারি করেছে।
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র, আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা রাঘব চাড্ডা-সহ বিরোধী নেতারা দাবি করেন, তাঁদের আইফোন থেকে রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট ‘শক্তি’ তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে ‘অ্যালার্ট’ দেওয়া হয়েছে। আইটি ও প্রযুক্তি মন্ত্রী বৈষ্ণব এ প্রসঙ্গে বলেছেন, অ্যালার্টগুলিতে অ্যাপলের দেওয়া বেশিরভাগ তথ্য "অস্পষ্ট" এবং "অ-নির্দিষ্ট" বলে মনে হয়। মন্ত্রী, একাধিক পোস্টে বলেছেন, সরকার অ্যাপলকে "রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট ‘শক্তি’তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা সংক্রান্ত নিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন”। তিনি বলেন, "আমরা কিছু সাংসদ ও বিরোধী দলের নেতাদের কাছ থেকে অ্যাপেলের তরফে প্রাপ্ত একটি বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে মিডিয়াতে যে বিবৃতি দেখেছি তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে বিজ্ঞপ্তিতে তাদের ডিভাইসে 'রাষ্ট্র-স্পন্সর আক্রমণ' সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে অ্যাপলের বেশিরভাগ তথ্য অস্পষ্ট এবং অ-নির্দিষ্ট প্রকৃতির বলে মনে হয়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, যে ভারত সরকার সমস্ত নাগরিকের গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়কে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং এই বিজ্ঞপ্তিগুলির ভিত্তিতে গভীরে গিয়ে তদন্ত করবে সরকার। বিষয়টি সামনে আসার পরপরই, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একটি প্রেস কনফারেন্সে ভাষণ দিয়ে বলেছিলেন যে বিরোধীরা গৌতম আদানিকে "টার্গেট করাতেই" ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র। রাহুল দাবি করেন, দেশ চলছে গৌতম আদানির কথাতেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকেই অনুসরণ করেন।
এদিকে অ্যাপেলের তরফে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসায় রাজনৈতিক তোলপাড় শুরু হয়। যে সকল নেতারা এই অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন কেসি ভেনুগোপাল, পবন খেদা, সীতারাম ইয়েচুরি, প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, টিএস সিং দেও, মহুয়া মৈত্র, রাঘব চাড্ডার নাম। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিক তোলপাড় শুরু হয় এবং বিরোধীরা সরকারকে এই ইস্যুতে আক্রমণ করে।
যদিও কেন্দ্রীয় আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে ভারতে বিরোধীরা ফোন ট্যাপিংয়ের অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগেও বহুবার ফোন ট্যাপিংয়ের ঘটনা সামনে এসেছে। এদিকে এরপরই কেন্দ্রকে নিশানা করেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, "আপনি যত খুশি (ফোন) ট্যাপ করতে পারেন। আমি পরোয়া করি না। আপনি চাইলে আমি আপনাকে আমার ফোন দিতে পারি। আমরা লড়াই করতে ভয় পাই না”।