সতীশ ঝা, আহমেদাবাদ: ইশরাত জাহান সংঘর্ষ মামলায় আটক প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ডি জি ভানজারার আইনজীবী সিবিআই আদালতে বিস্ফোরক দাবি করেছেন। ভানজারার মুক্তির আবেদন করতে গিয়ে আইনজীবী ভি ডি গজ্জর বলেছেন, "সিবিআই চেয়েছিল কালো দাড়ি ও সাদা দাড়ির লোককে গ্রেফতার করতে, কিন্তু তা না পেরে লাল দাড়ির লোককে গ্রেফতার করেছে।"
মুক্তির আবেদনপত্রে ভানজারা দাবি করেছেন, এই মামলায় সিবিআই গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তবে সিবিআই এ দাবি নাকচ করে দিয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি পুলিশ সুপার ডি এইচ গোস্বামীকে উদ্ধৃত করেছেন আইনজীবী। ২০০৪ সালে ক্রাইম ব্রাঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ডি এইচ গোস্বামী। তাঁর দাবি, তিনি ভানজারার বলতে শুনেছেন, "ইশরাত সহ অন্যদের সংঘর্ষে হত্যার ব্যাপারে কালো দাড়ি ও সাদা দাড়ি দুজনেরই অনুমতি পাওয়া গেছে।"
বিশেষ সিবিআই আদালতে বিচারপতি জে কে পাণ্ডিয়ার এজলাশে গজ্জর বলেন, "সিবিআই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পেরে ওঠেনি।" তিনি আরও বলেন, "ডিএইচ গোস্বামী একজন অধস্তন অফিসার ছিলেন, এবং বানজারার চেম্বারে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক চলছিল, সেখানে যাওয়ার অধিকারই ছিল না তাঁর।"
গজ্জরের অভিযোগ, "তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গ্রেফতার করার জন্য এসব গল্প বানিয়েছিল সিবিআই।"
সিবিআইয়ের অভিযোগ, ২০০৪ সালের ১৪ জুন, অন্য অভিযুক্ত জি এল সিংহলের সঙ্গে সংঘর্ষের বেশ কয়েকঘন্টা আগে তাঁর দফতরে বসে বৈঠক করেন ভানজারা। ওই অফিসে বসেই এফআইআরের 'পরিকল্পনা' করা হয় বলে অভিযোগ।
ভানজারার আইনজীবী আদালতে তাঁর সওয়ালে বলেছেন, সিবিআইয়ের প্রধান সাক্ষীদের তালিকায় যে ডি এইচ গোস্বামী, চেতন গোস্বামী, ভারত প্যাটেল ও ইব্রাহিম কে চৌহানের নাম রয়েছে, তাঁরাই ছিলেন এনকাউন্টার টিমের সদস্য। আদালতে গজ্জর আরও বলেন, ইব্রাহিম কে চৌহান একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও ভগবানের নামে শপথ নিয়েছিলেন, ফলে তাঁর বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়। আইনজীবীর যুক্তি, "এটা সাম্প্রদায়িকতার ব্যাপার নয়, কিন্তু উনি কোরাণ শরিফের নামে শপথ না নিয়ে ভগবানের নামে শপথ নিয়েছিলেন।"
২০০৪ সালের ১৫ জুন, ক্রাইম ব্রাঞ্চের আহমেদাবাদ শাখা ১৯ বছরের তরুণী ইশরাত জাহান, তার বন্ধু প্রাণেশ পিল্লাই, আমজাদ আলি রাণা ও জিশান জোহরকে হত্যা করে। সিবিআইয়ের মতে এই চারজনকে পরিকল্পনা মাফিক ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল।
বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক পান্ডিয়া জানিয়েছেন, আইবি অফিসারদের ফের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য শমন পাঠানো হতে পারে।