প্রকাশ্য সভায় পুলিশকে পেটানোর উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল বিজেপি-র উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি শংকর চক্রবর্তীকে। রবিবার দলীয় কর্মসূচি সেরে ফেরার পথে করণদিঘির থানার বোতলবাড়ি এলাকা থেকে রাত ৯টা নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয় শংকর চক্রবর্তীকে। সভায় করা মন্তব্যের ফুটেজ সংগ্রহ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ।
রবিবার ইসলামপুরে একটি দলীয় সভা ছিল বিজেপির। সেই সভাতেই বক্তব্য রাখেন শঙ্কর বাবু। অভিযোগ, সভায় প্রকাশ্যেই পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করেন শংকর চক্রবর্তী। ঘরে থাকা বঁটি, লাঠি দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করতে বলেন দলীয় নেতাদের। শুধু তাই নয় পুলিশকে বেঁধে পেটানোর উসকানিও দেন বলে অভিযোগ। শঙ্কর চক্রবর্তীর এই ধরনের মন্তব্যের পরেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে। সেই সভা সেরে রায়গঞ্জে ফেরার পথে করণদিঘি থানার বোতলবাড়ি এলাকায় রাস্তায় তার গাড়ি আটকায় পুলিশ। রাস্তা থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
ইসলামপুরে বিজেপি সভাপতি গ্রেফতার pic.twitter.com/XOoDojlX1d
— IE Bangla (@ieBangla) September 24, 2018
দুদিন আগেই শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে উত্তরদিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল চত্বর। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বসে ছাত্রছাত্রীরা। সেই অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ করে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে কাদানে গ্যাসের সেল ফাটানো,রাবার বুলেটও চালাতে হয়। এরই মাঝে হঠাৎ গুলির শব্দ পাওয়া যায়। গুলি লাগে স্কুলের দুই প্রাক্তন ছাত্রের। মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের। ঘটনার পর এখনো থমথমে এলাকা। বিরোধী দলের একের পর এক প্রতিনিধিরা গিয়ে এলাকায় মিছিলও করে। সেইমতো এদিন ইসলামপুরে বিজেপির দলীয় সভা ছিল। সেই সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন "পুলিশ অত্যাচার চালালে, নিয়ম না মানলে আপনারাও রুখে দাঁড়ান। ঘরে থাকা বঁটি, লাঠি দিয়ে আক্রমণ করুন। বেঁধে পেটান। পুলিশের ছোড়া গুলিতে দুটি প্রাণ গিয়েছে। প্রয়োজনে আরও হাজার বুক আমরা পেতে দেব। তবে পুলিশি অত্যাচারের সামনে মাথা নত করব না।" দুটি প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। উলটে যারা বিজেপি করছে তাদের রাতের বেলা ধরছে পুলিশ। রক্ষক ভক্ষক হলে কাউকে না কাউকে আওয়াজ তুলতে হবে। তাই আমি বলে দিয়ে এসেছি, পুলিশ যদি রাতের বেলা ঢোকে, মহিলাদের শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে, পুলিশ আইন না মানলে আত্মরক্ষার স্বার্থে মহিলারা আইন হাতে তুলে নেবেন। বাঁশ, বঁটি যা থাকবে তা দিয়ে পুলিশকে কাউন্টার করবেন। পুলিশকে সবরকমভাবে অসহযোগিতা করবেন। কোথাও অসুস্থ কুকুর পড়ে থাকলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন কিন্তু পুলিশকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে তাঁর দিকে ফিরেও তাকাবেন না।"এই মন্তব্যের পরেই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। যদিও বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ মুখ খুলতে চায়নি।