দুজনেই প্রাক্তন আইপিএস। দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য। একজন বর্তমানে, আরেক জন ছিলেন। কিন্তু এবার সেই দুজনই সম্মুখ সমরে। গতকালই তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উল্লেখযোগ্য নাম ছিল সদ্য তৃণমূলে যোগদান করা প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীর। তাঁকে প্রার্থী করে রীতিমতো চমক দিয়েছেন মমতা। আর শনিবারই প্রথম ও দ্বিতীয় দফার ভোটের প্রার্থী ঘোষণা করে বিজেপি। সেই ৫৭ জনের তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষের। আসন, সেই ডেবরা। আর এখানেই লড়াই জমে গিয়েছে।
হুমায়ুন কবীর ইস্তফা দেওয়ার আগে পর্যন্ত ছিলেন চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার। তৃণমূল জমানায় শাসকদল তথা মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহধন্যও বটে। দক্ষ অফিসার হলেও শাসকশিবিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁকে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ একাধিক বার তুলেছে বিরোধীরা। গত বছর তেলিনীপাড়ায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির সময় তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং অর্জুন সিং। এবার তিনিই তৃণমূলের প্রার্থী। নিজেকে দিদির দূত হিসাবে অভিহিত করেন। ইতিমধ্যেই ডেবরায় তাঁর নামে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। জিতবেন বলেই একপ্রকার নিশ্চিত হুমায়ুন।
এদিকে, তৃণমূল জমানাতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী ঘোষ। পরে ঝাড়গ্রাম পুলিশে জেলারও সুপার হন। তাঁকে একসময় জঙ্গলমহলের মা বলে সম্বোধন করতেন অনেকে। আবার তিনিও মমতার স্নেহধন্যা কম ছিলেন না। তারপর শুরু হয় শাসকশিবিরের সঙ্গে দূরত্ব। তাঁকে গ্রেফতার করতে কোমর বাঁধে রাজ্য পুলিশ। ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন ভারতী। ঘাটালে লোকসভা ভোটে প্রার্থীও হয়েছিলেন। কিন্তু অভিনেতা দেবের কাছে হেরে যান। তাঁর হার নিয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন, বুথ দখল করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে ভারতীকে।
এবার চেনা পশ্চিম মেদিনীপুরে আবার প্রার্থী ভারতী। বিপক্ষে আরেক আইপিএস হুমায়ুন কবীর। ডেবরায় একসময় তৃণমূল শক্তিশালী ছিল। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে সংগঠন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়েছে। শক্তিশালী হয়েছে বিজেপি। তবে দুই প্রাক্তন আইপিএসের লড়াই জমে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। দুই পুলিশের ভোটযুদ্ধ দেখতে মুখিয়ে ডেবরাবাসী।