দায়িত্ব নিয়েই বিস্ফোরক সুকান্ত মজুমদার। বাংলায় তালিবানি শাসন চলছে বলে পরোক্ষে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন নতুন বিজেপি সভাপতি। দিলীপ ঘোষের উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এদিন ফের একবার কৃতজ্ঞতা জানান তরুণ এই রাজনীতিবিদ। দল পরিচালনায় প্রত্যেকের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে এদিন সুকান্তের বরিষ্ঠ নেতাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন হেস্টংসে দলীয় কার্যালয়ে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, তথাগত রায়দের পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত মজুমদার।
দিলীপ ঘোষের জায়গায় এবার বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বে বালুরঘাটের তরুণ সাংসদ পেশায় অধ্যাপক সুকান্ত মজুমদার। গুরুদায়িত্ব পাওয়ার পর আজ সকালেই কলকাতায় পৌঁছোন সুকান্ত। হেস্টিংসে দলের কার্যালয়ে এরপর সাংবাদিক বৈঠক। দুই পূর্বসূরিকে পাশে বসিয়ে এদিনের সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেন সুকান্ত । রাহুল সিনহা ও দিলপ ঘোষকে পাশে বসিয়েই এরপর চাঁচাছোলা ভাষায় একের পর এক মন্তব্য করতে থাকেন সুকান্ত। তৃণমূল নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করে সুকান্ত বলেন, ''রাজ্যে তালিবানি শাসন চলছে। অনেক বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। অনেক বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া। তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এবার বাংলাকে রক্ষা করতে হবে।''
এরাজ্যে বিশিষ্টদের একটি অংশ তৃণমূলকে সমর্থন করেন। দায়িত্ব নিয়েই এদিন বিশিষ্টজনেদের সেই অংশটিরই কড়া সমালোচনায় সরব হয়েছেন সুকান্ত। রাজ্যে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে একের পর এক বিজেপি নেতা খুন হচ্ছেন বলে অভিযোগ নয়া রাজ্য বিজেপি সভাপতির। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে বলেও দাবি সুকান্তর। এই প্রসঙ্গে বিশিষ্টদের ওই অংশকে বিঁধে সুকান্তর তোপ, ''অনেক সময়ে বুদ্ধিজীবীরা আমাদের নেতাদের কথা নিয়ে কাটাছেঁড়া করেন। আমি তাঁদের বুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই। কোন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভোটের ফলের পর অভিজিতের মতো তরুণ ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। এব্যাপারে কেন নিশ্চুপ বিশিষ্টরা?''
অন্যদিকে, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে ঘর ভাঙছে বঙ্গি বিজেপির। রাজ্যস্তরের পাশাপাশি জেলাস্তরেও বহু নেতা-কর্মী পদ্ম ছেড়ে জোড়াফুলে যাচ্ছেন। সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। যা নিয়ে শোগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। তবে এপ্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারের সাফ কথা, ''কর্মীরাই বিজেপির শক্তি। আদর্শ নিয়ে বিজেপি লড়ছে। কয়েকজনকে নিয়ে গেলে বিজেপি শেষ হবে না। বিজেপি থেকে নেতারা গেলেও আদর্শ শেষ হবে না। তবে এত বড় সংসারে মতবিরোধ থাকতেই পারে।''
আরও পড়ুন- করোনা কড়াকড়ি জারি, অভিষেকের পদযাত্রায় অনুমতি দিল না ত্রিপুরা সরকার
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে বিরোধীর। এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে মোদী-বিরোধী প্রধান মুখ হিসেবে বারবার উঠে আসছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। তবে এই ধারণায় আমল দিতে নারাজ সুকান্ত। তাঁর দাবি, ২০১৯-এর চেয়েও আগামী লোকসভা ভোটে এরাজ্য থেকে আরও বেশি সংখ্যক সাংসদ বিজেপি দিল্লিতে পাঠাবে। ২৪-এর লোকসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীই ফের একবার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন বলেও আশাবাদী সুকান্ত।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন