‘আমার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে’। অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার ফোন ট্যাপিং নিয়ে পাল্টা অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি বলেন, 'এরাজ্যেও অনেকের গোপনীয়তা খর্ব হচ্ছে।'
রাজ্যপাল ধনকড় বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী কোন তথ্যের ভিত্তিতে একথা বলছেন, তা উনিই বলতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কী তথ্য আছে, তা জানি না। তবে আমি বলতে পারি যে, এরাজ্যেও বহু নেতা, ব্যবসায়ী সহ অনেকের গোপনীয়তা খর্ব হচ্ছে। অনেকেই আমাকে একথা বলেছেন।'
আরও পড়ুন: আড়ি পাতা হয়েছিল প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ফোনেও, অভিযোগ কংগ্রেসের
রাজ্যপালের অভিযোগের পরই তাঁকে নিশানা করেন রাজ্যের শাসক দল। সাংবিধানিক পদে থেকে জগদীপ ধনকড় বিজেপি হয়ে কথা বলছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জানতে চান, 'কারা রাজ্যপালকে একথা বলেছেন?' পার্থবাবু বলেন, 'অমরা তাঁকে যথেষ্ট সম্মান দিচ্ছি। কিন্তু, রাজনৈতিক নেতাদের মতো ব্যবহার করে তিনি মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওনার ভাবা উচিত উনি রাজ্যপাল নাকি বিজেপির প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছেন। রাজ্যপালের সঙ্গে শাসক দলের মত পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু তা চার দেওয়ালের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলা ভালো। রাজ্যপাল প্রতিনিয়ত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে চলেছেন। মানুষ সব দেখছে।'
প্রসঙ্গত, তাঁর ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে যখন তোলপাড় গোটা দেশ ও দুনিয়া, ঠিক সেই প্রেক্ষাপটে মমতার এহেন অভিযোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আমার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। জানি এটা। আমার কাছে এর প্রমাণ রয়েছে'। এরপরই মমতার অভিযোগ, 'সরকার সব জানে। সরকারই করছে।' তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বিস্ফোরক রাজ্যপাল। ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের ফের সংঘাতের আবহ।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে বাঙালি খুনের প্রতিবাদে মোমবাতি হাতে কলকাতার পথে তৃণমূল
পাশাপাশি কাশ্মীরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও রাজ্যপাল ও তৃণমূলের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট। রাজ্যপাল বলেন, 'উপত্যকা এখন শান্ত। কিন্তু সেখানে শ্রমিক মৃত্য নিয়ে রাজনীতি চলছে। যা বেদনা দায়ক।' জবাবে তৃণমূল মহাসচিব বলেন, 'কেন পাঁচ বাঙালী শ্রমিককেই খুন করা হল? তা নিয়ে তদন্ত করা উচিত। ওনার কাছ থেকে দেশপ্রেম শিখবো না।'
দুর্গা কার্নিভালে তাঁর অসম্মান নিয়ে সরব ছিলেন রাজ্যপাল। এবার তিনি মুখ খুললেন আসন্ন কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে নিমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে। বললেন, 'বিশ্বমানের এক উৎসব হতে চলেছে কলকাতায়। কিন্তু সেখানে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের কোনও স্থান নেই। আমি ব্যাথিত। এইভাবে চলতে পারে না।' ধনকড়ের মন্তব্যকে 'শিশুসুলভ' বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল মহাসচিব।
Read the full story in English