বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে ফের রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। একাধিক টুইটে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে প্রশাসনের পদক্ষেপ জানতে সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে তলব করেছেন ধনকড়।
একই ইস্যুতে গতকাল রাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে রাজ্যপাল টুইটে লিখেছিলেন, 'রাজ্যে যেভাবে ক্রমাগত ভোট পরবর্তী হিংসা চলছে, তাতে মানবতা লজ্জায় পড়বে। পুলিশ কিছু করছে না। ফলে হিংসায় যুক্ত ব্যক্তিদের সাহস বাড়বে। পুরোটাই বিরোধীদের শাস্তি দিতে করা হচ্ছে।'
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের পর হিংসার আবহাওয়া বিরাজ করছে, এই অভিযোগ এনে রাজ্যপাল ধনকড় এদিন টুইটে লিখেছেন, 'রাজ্য প্রশানের কর্তা ব্যক্তিরা হিংসার ঘটনাকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। এর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছেন না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুলিশ শাসক দলের বর্ধিত সংস্করণ হিসাবে কাজ করছে। রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর হওয়া অত্যাচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে শিথিলতা দেখাচ্ছে।' কার্যত পুলিশের বিরুদ্ধে হিংসায় মদতের জোড়াল অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল।
কেশপুরে বিজেপি কর্মীদের সামাজিক বয়কটের নিদান প্রসঙ্গেও প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন রাজ্যপাল। বিষয়টিকে ভয়ঙ্কর বলে মনে করছেন তিনি। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'বিরোধীদের সামাজিক ভাবে বয়কট করে দেওয়া হচ্ছে। সুযোগ-সুবিধা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। নিজের বাড়িতে ফেরার জন্য তাঁদের টাকা দিতে হচ্ছে।'
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে ও বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন রাজ্যপাল। ভোটে পরবর্তী হিংসার সঙ্গেই নারদ মামলায় রাজ্যের চার নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার নিয়ে সিবিআইয়ের দফতরের বাইরে হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন তিনি। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে এখনও পর্যন্ত নবান্ন কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানতেই মুখ্যসচিবকে তলব করেছেন জগদীপ ধনকড়।
২রা মে ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দলীয় মেতা-কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছে বিরোধী শিবির। কাঠগড়ায় তোলা হয় তৃণমূলকে। এই অভিযোগে সরব শাসক দলও। এর আগেও বাংলার ভোট পরবর্তীহিংসা নিয়ে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন জগদীপ ধনকড়। রাজ্যে নির্বাচন শেষ হওয়ার ঠিক পরকে পরেই তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন