ছাত্র যুব ফ্রন্টসহ সিপিএমের জেলার নেতারা গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার পর ধর্মঘটের সমর্থনে জলপাইগুড়ির রাস্তার দখল নিল বামপন্থী মহিলা ব্রিগেড।
মঙ্গলবার কাকভোর থেকে রাস্তায় ছিলেন সিপিএম-এর জেলার নেতারা। রাস্তায় ছিলেন সিপিএম এর জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য, ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ জিতেন দাস, জেলা কমিটির সদস্য কৌশিক ভট্টাচার্য, ডি ওয়াই এফ আই এর জেলা সম্পাদক প্রদীপ দে, যুব নেতা দীপশুভ্র সান্যাল। ছিলেন ধূপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক মমতা রায়ও। বেলা গড়াতেই এঁদের সকলকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন, Bharat Bandh 2019: রাজ্যে গ্রেফতার একাধিক শীর্ষ বাম নেতা, সচল কলকাতা
অন্য ফ্রন্টের নেতাদের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাস্তায় নামেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সদস্যরা। মিছিল করে রাস্তায় চলা টোটো, রিক্সো, গাড়ী চালকদের আটকানো শুরু হয়। দোকানগুলিতে গিয়ে করজোড়ে দোকান বন্ধ অনুরোধ জানান তাঁরা।
এরপর মহিলা মিছিল পৌঁছয় পূর্ত দপ্তরে। সেখানে গিয়ে গেট আটকে শুরু হয় গণসংগীত। পুলিশ সেখানে পৌঁছনোর পর বচসা শুরু হয় দু পক্ষের মধ্যে। অফিসে কাজে যোগ দেওয়া সরকারি কর্মীদের বনধে শামিল হতে অনুরোধ জানান সিপিএমের মহিলা কর্মীরা।
জলপাইগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলর তথা গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির নেত্রী কাবেরী চক্রবর্তী বলেন, "আজ আমরা ১৮০০০/- নূন্যতম বেতন সহ অন্যান্য দাবী নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের প্রচুর নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমরা আন্দোলনের তাৎপর্য মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। বনধ সর্বাত্মক।"
আরও পড়ুন, দুদিনের ভারত বনধ্: কয়েকটি জরুরি তথ্য
হরতালের সমর্থনে এদিন রাস্তায় নেমেছিলেন কংগ্রেস কর্মীরাও। জাতীয় কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদারের নেতৃত্বে জলপাইগুড়ি আদালতের গেটে তেরঙা পতাকা নিয়ে পিকেটিং করতে দেখা যায়।
এদিকে লিন পিরিয়ডে ডাকা এই ধর্মঘটে জলপাইগুড়ি চা বাগানগুলিতে মিশ্র প্রভাব পড়েছে।
লিন পিরিয়ড এর শুরুতে বেশিরভাগ চা বাগানে চা গাছ পুর্নিং এর কাজ শেষ। শুরু হয়েছে জলসেচের পাশাপাশি চা গাছ পরিচর্যার কাজ। এই সময়ে চা বাগান গুলিতে কাজের ব্যস্ততা অপেক্ষাকৃতভাবে কম থাকে।
মঙ্গলবার সকালে চা বাগানে না এসে ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় নামেন চা শ্রমিকদের একাংশ। তবে তা উপেক্ষা করে চা বাগানে কাজে যোগও দিয়েছেন কেউ কেউ।
সিটুর চা শ্রমিক নেতা রামলাল মুর্মু জানিয়েছেন, "প্রথম দিনে চা বাগানে বনধ সর্বাত্মক হয়েছে। লিন পিরিয়ডে কাজ কম থাকায় হরতাল করা খুবই সমস্যার। তা সত্ত্বেও আমরা শ্রমিকদের বিষয়টি বোঝাতে পেরেছি।" একই সঙ্গে তিনি জানান, "আমরা কাউকে জোর করে আটকাইনি। ৫-১০ শতাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। এখনই হয়ত আমরা সবাইকে বিষয়টি বোঝাতে পারিনি। তবে আমাদের বিশ্বাস ভবিষ্যতে তাঁরা এই আন্দোলনের কারণ বুঝতে পারবেন।"
তৃণমূল কংগ্রেস ইউনিয়নের চা শ্রমিক নেতা অমরনাথ ঝা বলেন, "পুরো ডুয়ার্স খোলা। সমস্ত চা বাগানের গেট খোলা। কাজ চলছে। শ্রমিকরা বনধ সমর্থন করেনি।"
বাম প্রভাবিত কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে প্রণব ভট্টাচার্য দাবী করেছেন, জলপাইগুড়িতে সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারী দপ্তরে ধর্মঘট ১০০%। ডাকঘর দুটি হেড পোষ্ট অফিস সহ ডিভিশনের সব অফিস বন্ধ, আয়কর দপ্তর, কাষ্টমস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, CWC, BSNL সব দপ্তরে ১০০% ধর্মঘট পালিত হচ্ছে।