দলছুটদের ঘরে ফেরানোর কর্মসূচিতে জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের আদি বনাম যুব-র হাতাহাতি ও মাথাফাটাফাটির ঘটনায় যখন শোরগোল, তার এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রায় শ খানেক তৃণমূল নেতা-কর্মীকে ঘরে ফেরাল কংগ্রেস।
বিগত পঞ্চায়েত ভোটের আগে সদলবলে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছিলেন নাগরাকাটার প্রাক্তন বিধায়ক তথা দাপুটে কংগ্রেস নেতা জোসেফ মুন্ডা। তাঁর সাথে সেদিন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদেন ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আবদুল মান্নান ও তার অনুগামীরা। বৃহস্পতিবার পুরনো ঘরে ফিরলেন সেই মান্নান। এ উপলক্ষে মেটেলি ব্লক কংগ্রেস দফতরে আয়োজিত এক বিশেষ কর্মসূচিতে মান্নানের নেতৃত্বে ফের কংগ্রেসের হাতে পতাকা তুলে নিলেন শতাধিক কর্মী। এই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন জেলার কংগ্রেস নেতারাও।
আরও পড়ুন, জলপাইগুড়িতে নব্য ও আদি তৃণমূল সদস্যদের প্রকাশ্য সভায় মারদাঙ্গা, রক্তপাত
আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘জোসেফ মুন্ডার সঙ্গে আমিও ওই সময়ে আমার অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। শাসক দল আমাকে নতুনভাবে পদ দেবে আশা করেছিলাম। কিন্তু গিয়ে দেখি, ওখানে একগাদা গোষ্ঠী। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন পদ তো দুরের কথা, ন্যূনতম সম্মান টুকুও দেয় নি। এবারে এদিকে আবার সোমেনদা হাল ধরেছেন। আশা করি আমার মত বহু কর্মী ফের কংগ্রেসে ফিরে আসবে।’’
বর্তমান তৃণমূল নেতা জোসেফ মুন্ডাকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমরা উন্নয়নে শামিল হওয়ার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলাম। জানিনা কেন আবদুল মান্নান কংগ্রেসে যোগ দিলো। তবে এতে তৃণমূলে কোনো প্রভাব পড়বে না।’’
এদিকে, সম্প্রতি জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গোমস্ত পাড়ায় ছিলো তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান কর্মসূচি। বিভিন্ন কারণে গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে সমস্ত কর্মীরা নির্দল বা বিজেপি-তে যোগদান করেছিলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের দলে ফিরিয়ে ঘর গুছিয়ে নেওয়া ছিলো তৃণমূলের মূল লক্ষ্য।
সেই রকমই একটি সভায় আদি ও নব্য তৃণমূলীদের মধ্যে প্রকাশ্য সভায় শুরুহয় তর্কাতর্কি। পরে যা গড়ায় মারামারি ও রক্তপাতে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় আদি ও নব্য দের প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের মন্ত্রী তথা জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের পরিদর্শক অরূপ বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বলে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন, কংগ্রেস যুব সভাপতি পদে সোমেনপুত্র রোহনের হারের আড়ালে কে?
জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিত ভট্টাচার্য জানান, সোমেন মিত্র দায়িত্ব নেবার পর পুরনো কংগ্রেস কর্মীরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার এর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে আগামী ১২ ডিসেম্বর রানী রাসমনি রোডে কংগ্রেসের জনসভার প্রচার করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ডি পি রায়, সুখবিলাস বর্মা সহ অন্যান্য নেতারা জেলার বেশ কয়েকটি বড় মাপের জনসভায় প্রচার চালাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।