Advertisment

Mamata Banerjee: ভাঙা ঘরের হাল ফেরাতে জঙ্গলমহলে মুখ্যমন্ত্রী?

জঙ্গলমহলে তৃণমূল কংগ্রেসের খাস তালুকে থাবা বসিয়েছে পদ্ম শিবির। ঘাসফুলের পরিবর্তে কেন পদ্মের বাড়়বাড়়ন্ত, তা নিয়ে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব চিন্তিত। এবার জোর খবর, তৃণমূলের ওই গড়় সামলাতে যাচ্ছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
bengal panchayat election results

জঙ্গলমহলে ক্রমশ শিকড় পোক্ত হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের

দলের শীর্ষ নেতৃত্বও পালা করে ছুটছেন এলাকায়

Advertisment

জয়প্রকাশ দাস

জঙ্গলমহলের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রদর্শনের পর তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর আর ভরসা করতে পারছেন না। সূত্রের খবর, ভাঙা ঘরের হাল ফেরাতে এবার শেষমেষ জঙ্গলমহলে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই তিন দিনের সফর হওয়ার কথা। প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি সংগঠনের হাল নিয়েও বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর।

আদিবাসী অঞ্চলে সমস্ত সরকারি সুবিধা দেওয়ার পরও কেন এই হতাশাজনক ফল, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষন করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পদ্ম শিবির জঙ্গলমহলে বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে। কীভাবে সেখানে ঘুরে দাঁড়াবে দল, তা নিয়েই পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের বুথ ভিত্তিক রিপোর্ট তলব করেছে তৃণমূল। দলের হাল খতিয়ে দেখতে একের পর এক শীর্ষ নেতা ছুটছেন জঙ্গলমহলে।

আরও পড়ুন: CBI কাঁচকলা, ED দেখিয়ে লাভ নেই: অভিষেক

জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল না এমন নয়। বাম আমলে মাওবাদীদের অবাধ বিচরণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছিল রাজ্য়ের পশ্চিমাঞ্চলকে। তারপর সেখানে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। বাম জমানার পর ঘাসফুলে ছেয়ে গিয়েছে আদিবাসী অধ্য়ুষিত ওই এলাকা। উন্নয়ন একেবারে হয়নি, তেমন অভিযোগও করতে পারবে না বিরোধীরা। তা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেসের হাত থেকে একাধিক পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের ফলের পর জঙ্গলমহলের গুরত্ব বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুন। ২০১৯ লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি দুই যুযুধান নেতৃত্ব এখন জঙ্গলমুখী। কেউ নিজেদের দ্রুত শুধরে নিতে চান। আর কেউ দখল করতে আগ্রহী।

তৃণমূলের নীচুতলার নেতা ও কর্মীদের অভিযোগ, একাধিকবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে স্থানীয় স্তরের একাংশের দুর্নীতির কথা জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। তাঁদের দাবি, ওই কারণেই দলের এই বেহাল দশা। এমনকী দল ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন লালগড়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি। ভোটের ফল বেরোতেই জঙ্গলমহলে গিয়ে বৈঠক করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক তথা রাজ্য় সভাপতি সুব্রত বক্সী। ওই দিন  তিনি জেলা নেতৃত্বকে বুথ ভিত্তিক বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। সূত্রের খবর, ৩১ মে ঝাড়গ্রাম যাচ্ছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। সেখানে স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে খারাপ ফলের কারণ জানার চেষ্টা করবেন। মঙ্গলবার মেয়ো রোডে তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় জানিয়েছেন তিনি ১ জুন পুরুলিয়া যাবেন। অবশেষে সেখানে পৌঁছবেন দলনেত্রী।

westbengal cm, mamata banerjee মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ফাইল ছবি - শুভম দত্ত, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

রাজনৈতিক মহলের মতে, দলের অন্দরে যে এমন ঘুণ ধরেছে তা বুঝে উঠতে পারেনি তৃণমূল নেতৃত্ব। এখন লোকসভা ভোটের আগে দ্রুত জঙ্গলমহলে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চায় শাসকদল। বর্তমান পরিস্থিতির বদল না ঘটলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে নিশ্চিত। জাতীয় স্তরে দলের প্রভাব বাড়়াতে উঠে পড়়ে লেগেছে তৃণমূল, কাজেই সেখানে যদি আসন সংখ্যা টলমল হয়ে যায় তাহলে দলের মনোবল ভেঙে যাবে, দিল্লিতে দর থাকবে না তৃণমূলের।

আরও পড়ুন: তৃণমূলকে হটাতে বুথ ক্য়াম্প থেকে জোটের দাবি সিপিএম-বিজেপির

এদিকে জঙ্গলমহলে পঞ্চায়েতের ফলাফলে উচ্ছসিত গেরুয়া শিবির। লোকসভা নির্বাচনে পাখির চোখ করছে জঙ্গলমহলকে। সবকটি লোকসভার আসনে জয় পেতে মরিয়া বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে ঝাড়গ্রামে নিয়ে গিয়ে সভা করার পরিকল্পনা রয়েছে। জুন মাসের শেষ দিকে দু-একদিনের জন্য় তাঁর এ রাজ্য়ে আসার কথা রয়েছে। তখন সম্ভব না হলেও পরের সফরে ওই সভা করার কথা। কোন মাঠে সভা হবে তা-ও একপ্রকার ঠিক করে ফেলেছে পদ্ম শিবির। ওই সময় আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে আহারও করতে পারেন শাহ।

tmc bjp Mamata Banerjee jangalmahal
Advertisment