Advertisment

‘বৈশাখীর অভিমানের কারণ কি শোভনের পুরনো বান্ধবী?’

‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বৈশাখীর মতো শিক্ষিত মহিলার মান-অপমান কি এতটাই ঠুনকো যে এসব করছেন!’’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
‘বৈশাখীর অভিমানের কারণ কি শোভনের পুরনো বান্ধবী?’

শোভন-বৈশাখী। বৈশাখীর ছবি টুইটার থেকে।

শোভন-বৈশাখী-দেবশ্রী 'ত্র্যহস্পর্শে' জেরবার বিজেপি। যত দিন গড়াচ্ছে ততই যেন এই ত্রয়ীকে ঘিরে জটিলতা বাড়ছে। ‘‘দেবশ্রী রায় এলে কি বৈশাখীদেবীর অভিমান হবে? আজ শোভনের বান্ধবী বৈশাখী কি তাঁর (শোভনের) পূর্বতন বান্ধবীকে (দেবশ্রী) মেনে নিতে পারছেন না? হিন্দি সিনেমায় যেভাবে দেখা যায়’’, দেবশ্রী রায়কে ঘিরে শোভন-বৈশাখীর ‘আপত্তি’ প্রসঙ্গে এবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় এমন মন্তব্যই করলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। উল্লেখ্য, দেবশ্রীকাণ্ডে জয়প্রকাশের নাম জড়িয়েছিলেন বৈশাখীই। শোভন-বৈশাখী যেদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেদিন দিল্লির বিজেপি সদর দফতরে দেবশ্রী রায়কে কে নিয়ে গিয়েছিলেন, এই প্রশ্নের কোনও উত্তরই মিলছিল না। এমতাবস্থায় অধ্যাপিকা তথা শোভন-বান্ধবী বৈশাখী দাবি করেছিলেন, জয়প্রকাশ মজুমদারের বন্ধু সুদীপ রায়চৌধুরীর হাত ধরেই নাকি গত ১৪ অগাস্ট (ওই দিনই পদ্ম পতাকা হাতে নেন শোভন-বৈশাখী) দিল্লিতে বিজেপি দফতরে গিয়েছিলেন দেবশ্রী। তবে বৈশাখীর এমন দাবি অস্বীকার করেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি এদিন বলেন, ‘বৈশাখীদেবী মনগড়া কথা বলছেন’’। তবে বৈশাখী আবার পাল্টা বলেন, ‘‘দেবশ্রীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। কাজেই ওঁর সঙ্গে সমস্যা থাকার কোনও প্রশ্নই নেই। এটা ওঁর মনগড়া কাহিনী’’।

Advertisment

ঠিক কী বলেছেন জয়প্রকাশ মজুমদার?

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষই বলেছেন, দেবশ্রী তাঁকে জানিয়েছেন একটি এনজিওর সঙ্গে দিল্লিতে বিজেপি দফতরে গিয়েছিলেন। দিলীপ ঘোষ বলেছেন, জয়প্রকাশের নাম দেবশ্রী বলেননি। বৈশাখী মনগড়া কথা বলছেন’’। এরপরই এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এই নেতা বলেন, ‘‘দেবশ্রী যদি গিয়ে থাকেন, তাহলে দোষের কী? তাতে ওঁদের (শোভন-বৈশাখী) আপত্তি কেন? দেবশ্রী রায় তো একজন রাজনীতিক। দেবশ্রী রায় এলে কি বৈশাখীদেবীর অভিমান হবে? আজকে শোভনের বান্ধবী বৈশাখী কি তাঁর (শোভনের) পূর্বতন বান্ধবীকে মেনে নিতে পারছেন না? হিন্দি সিনেমায় যে রকমটা দেখা যায়...শোভনবাবু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, উনি রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করুন। দেবশ্রী গিয়েছেন, কারণ, আমি পছন্দ করি না, এটা তো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। দেবশ্রী দু’বারের বিধায়ক। উনি যদি মনস্থির করে থাকেন যে বিজেপিতে আসবেন, ওঁর সে অধিকার রয়েছে’’।

sovan baisakhi , শোভন, বৈশাখী শোভন-বৈশাখী। ছবি: টুইটার।

আরও পড়ুন: বৈশাখী ‘নতুন বউ’! শোভন কী বললেন দিলীপকে?

এ প্রসঙ্গে শোভন-বৈশাখীকে বিঁধে জয়প্রকাশ আরও বলেন, ‘‘দেবশ্রীর ব্যাপারে আপত্তি কার? শোভন বাবুর না বৈশাখীর? এটা কি রাজনৈতিক আপত্তি? রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন, রাজনৈতিক দলে রাজনৈতিক ইস্যু চলে, ব্যক্তিগত ইস্যু চলে না। প্রাক্তন বান্ধবী, বর্তমান বান্ধবী ইত্যাদি ইত্যাদি সব মিলিয়ে ফেলেছেন শোভনবাবু। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, এটা বাঞ্ছনীয় নয়। তাঁর মতো রাজনৈতিক ব্যক্তির জন্য রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়, ব্যক্তিগত বিষয় ব্যক্তিগত জায়গায় থাকা উচিত। আসলে দেবশ্রী রায়-বৈশাখী-রত্না শোভনবাবুর জীবনের ত্রহ্যস্পর্শ। এই সমস্যা ওঁদের নিজেদেরকেই মেটাতে হবে’’। জয়প্রকাশের মন্তব্য, ‘‘বিজেপিতে তো এত লোক কাজ করছেন, তাঁদের তো কারও সমস্যা হচ্ছে না। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বৈশাখীর মতো শিক্ষিত মহিলার মান-অপমান কি এতটাই ঠুনকো যে এসব করছেন!’’

jayprakash majumdar, জয়প্রকাশ মজুমদার জয়প্রকাশ মজুমদার। ছবি: ফেসবুক।

আরও পড়ুন: বৈশাখীই ব্ল্যাকমেল করছেন, শোভনের কোনও হাত নেই: রত্না

কী বললেন শোভন-বৈশাখী?

জয়প্রকাশ মজুমদারের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জয়প্রকাশবাবু কেন, কী কারণে বলছেন, সে সবের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না। উনি এসব সম্পর্কে আলোচনা বন্ধ করুন। তিনি যা বলছেন, দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়কে নিয়ে বাইরে আলোচনা করছেন, এটা রুচিশীল নয়। রত্নার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলেছে, সেখানে পারিবারিক সমস্যার সঙ্গে দেবশ্রী জড়িত বলেই আমার অসুবিধার কথা জানিয়েছি। আশা করছি, দল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এতে জয়প্রকাশবাবুর কোনও মন্তব্য না করাই ভাল। অবান্তর গল্প না ছড়ানোই শ্রেয় বলে মনে করি’’।

sovan chatterjee, শোভন চট্টোপাধ্যায়, শোভন, দেবশ্রী রায়, দেবশ্রী, বৈশাখী, বিজেপিতে শোভন বৈশাখী, debashree roy, দেবশ্রী রায়ের খবর, sovan, baisakhi banerjee, baisakhi, বৈশাখী, debashree at bjp office, বিজেপি দফতরে দেবশ্রী শোভন, দেবশ্রী, বৈশাখী।

আরও পড়ুন: মমতা কখনও প্রকাশ্যে খারাপ কথা বলেননি, বৈশাখীর গলায় ‘বোধোদয়ের’ সুর

এদিকে, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ‘‘সুদীপ রায়চৌধুরীর কথা উনিই (জয়প্রকাশ) বলেছেন আমাদের। জয়প্রকাশ মজুমদার এত স্পর্ধা দেখিয়েছেন যে উনি বারবার আমার বিরুদ্ধে অসত্য কথা বলে চলেছেন। উনি সুপরিকল্পিতভাবে দেবশ্রী চ্যাপ্টারে মুকুল রায়ের নামে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। বিজেপি অফিসে অরবিন্দ মেননের পাশে বসে উনি বলেছেন, পুরো বিষয়টি মুকুল করেছেন, যাতে শোভনের যোগদান ভেস্তে যায়। পরবর্তীকালে আমরা জেনেছি, মুকুলদা জড়িত নন। উনি প্রথম থেকে চেয়েছিলেন শোভন ও মুকুলের সম্পর্ক যেন ভাল না থাকে। আমার ও শোভনবাবুর কাছে বারবার বলছেন যে মুকুলবাবু বিশ্বাসযোগ্য নন। এর থেকে বোঝা যায় ওঁর (জয়প্রকাশ) এই স্বভাব রয়েছে, মানুষের সঙ্গে এরকম চর্চাই করে যান। আমাদের এত সময় নেই’’। বৈশাখী আরও বলেন, ‘‘দেবশ্রীর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। কাজেই ওঁর সঙ্গে সমস্যা থাকার কোনও প্রশ্নই নেই। এটা ওঁর মনগড়া কাহিনী। শোভনের মতো দুঁদে রাজনৈতিক ব্যক্তিকে ট্যাকেল করা মুশকিল, তাই আমাকে সফট টার্গেট করা হচ্ছে। ওঁর কী উদ্দেশ্য জানি না’’। বৈশাখী আরও বলেন, ‘‘ কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ওঁর বাড়িতে যখন দেবশ্রী রায় খেতে গিয়েছিলেন, তখন জয়প্রকাশবাবু ছিলেন। কৈলাশজি বলেছেন, উনি (জয়প্রকাশ) ভাল করেই জানতেন যে দেবশ্রী আসছেন...আমাদের বিরক্ত করার জন্য দেবশ্রী ইস্যুকে বাঁচিয়ে রাখছেন উনি। দেবশ্রীকে নিয়ে আমি বা শোভন কেউই চিন্তিত নই। শোভন দুগ্ধপোষ্য শিশু নন, যে ওঁর সঙ্গে আমি যা নিয়ে অশান্তি করব, সেটা নিয়ে উনিও অশান্তি করবেন। দেবশ্রী রায়কে নিয়ে আপত্তি নেই, দেবশ্রী যেখানে কাজ করবেন, সেখানে করব না। আমাদের মতো করে এই আপত্তির কথা বলা হয়েছে। ওঁর (জয়প্রকাশ) বয়স হয়েছে, শুভবুদ্ধির উদয় হোক’’।

tmc bjp
Advertisment