দলের বিরুদ্ধে যখন 'বিদ্রোহী' হয়ে পুরস্কৃত শতাব্দী রায়, তখন উল্টো ছবি পশ্চিম বর্ধমানে। শাসক দল তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটিতে ঠাঁই হল না জিতেন্দ্র তিওয়ারির। তাঁর জায়গায় জেলা সভাপতি করা হয়েছে অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে। চেয়ারম্যান পদে আগের মতই রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলার নেতা মলয় ঘটক।
গত ডিসেম্বরে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলে আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক পদ ও দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। জোড়া-ফুল ছেড়ে তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুর নরম করেন জিতেন্দ্র। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আস্থা ও আনুগত্য প্রদর্শন করে থেকে যান তৃণমূলেই। দলূয় সংগঠনের হয়ে কাজও শুরু করেছেন তিনি।
কিন্তু এরপরও কেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ককে জেলা সভাপতি পদ ফিরিয়ে দেওয়া হল না? এমনকী ঠাঁই হল না দলের রাজ্য কমিটিতেও? রবিবার শাসক দলের পক্ষ থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকেই তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী দলের পুরনো সৈনিক জিতেন্দ্র তিওয়ারির 'বিদ্রোহ'কে জোড়া-ফুল নেতৃত্ব এখনও ক্ষমা করেনি।
যদিও দলীয় সিদ্ধান্তে অবাক নন খোদ আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র ও পুর-প্রশাসক। ঘনিষ্ট মহলে জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানিয়েছেন, তিনি নিজেই দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ফলে নেতৃত্ব সেই অনুয়ায়ী কাজ করেছেন। এতে হতাশার কোনও জায়গা নেই। দলবদলের জল্পনা উড়িয়ে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের একজন সাধারণ কর্মী ও বিধায়ক হয়ে কাজ চালাবেন তিনি।
পশ্চি বর্ধমান জেলা কমিটিতে নতুন মুখ হিসাবে জায়গা পেয়েছেন কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে বারাবনি ও কুলটি বিধানসভা এলাকায় কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিমের কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়ালকে। যদিও বিধানসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বনাথ পারিয়াল কংগ্রেসের বিধায়ক। রানিগঞ্জ-জামুরিয়ার কো-অর্ডিনেটর করা হল হরেরাম সিংকে। আসানসোল উত্তর-দক্ষিণ বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর ভি শিবদাসন। জেলার মুখপাত্র করা হয়েছে রয়েছেন রাজ্যের শিক্ষক নেতা অশোক রুদ্র এবং আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
'বিদ্রোহী' জিতেন্দ্রকে শেষ পর্যন্ত পুর প্রশাসক ও সাংগঠিক পদ ফেরানো হল না। তাহলে কী এবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র। প্রশ্ন উঠছে শিল্প শহরে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন