রাজনৈতিক সংকট যেন কাটছেই না জম্মু-কাশ্মীরে। বুধবার দিনভর চলল নাটক। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে নজিরবিহীন ভাবে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছিল কংগ্রেস-পিডিপি-এনসি। যা শুনে জম্মু-কাশ্মীর তো বটেই, দেশীয় রাজনীতিরও চোখ ছানাবড়া হয়েছে। নয়া জোটবার্তায় যখন উপত্যকাবাসী নতুন সরকারের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিলেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। রাজনৈতিক ডামাডোলের জেরে সন্ধ্যেয় শেষমেশ বিধানসভা ভেঙে দিলেন রাজ্যপাল। যার জেরে উপত্যকার রাজনৈতিক নাটক নয়া মোড় নিল।
কেন রাজনৈতিক ডামাডোল? বুধবার কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের সমর্থন নিয়ে রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানান পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। পিডিপি নেত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠতার হিসেব দিতে গিয়ে দাবি করেন যে, ৮৭ আসনের জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ৫৬ জন বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। এদিকে, কংগ্রেস-এনসি-পিডিপি জোটের সরকার গঠনের দাবি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন, পদ্মে কাঁটা, জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গঠনের পথে পিডিপি-এনসি-কংগ্রেস জোট
মেহবুবা বাহিনীকে টক্কর দিতে বিজেপিও ঘুঁটি সাজানোর কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু করে দেয়। বিজেপি-র সমর্থন নিয়ে পিপলস কনফারেন্সের সাজিদ লোনও সরকার গঠনের দাবি জানান। তিনি দাবি করেন যে, বিজেপি ও অন্য দলের আরও ১৮ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছেন তাঁদের কাছে। লন্ডন থেকে বাড়ি ফেরার পথেই সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে চিঠি লেখেন সাজিদ।
এ লড়াই দেখার পরই নাটকের মোড় ঘোরাতে আসরে নামেন স্বয়ং রাজ্যপাল। হঠাৎই বিধানসভা ভেঙে দেন সত্যপাল মালিক। কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি? রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে যে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের দলগুলি একজোট হয়ে সরকার গড়লে, সে সরকার কতটা স্থিতিশীল হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সরকার গঠনের জন্য যেভাবে কয়েকটি দল হাত মিলিয়েছে তাতে স্পষ্ট যে, তারা ক্ষমতায় ফেরার জন্য তা করেছে, সংবেদনশীল সরকার গঠনের জন্য নয়।
রাজভবনের তরফে এমনও বলা হয়েছে যে, সরকার গঠন করতে ঘোড়া কেনাবেচা কিংবা টাকার লেনদেনের মতো ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য ভাল নয়। যেভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দর কষাকষি চলছে, সেই প্রেক্ষাপটে সরকার গঠন নিয়ে সংশয় রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের মতো রাজ্য, যেখানে নিরাপত্তা একটা বড় ইস্যু, সেখানে স্থিতিশীল সরকার গঠন খুব জরুরি।
Read the full story in English