জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের দু'মাস পর বৃহস্পতিবার প্রথম ভোট হল উপত্যকায়। ব্লক উন্নয়ন পরিষদ স্তরের এই নির্বাচনে ২৮০টি আসনের মধ্যে ৮১টি ব্লক দখল করেছে নরেন্দ্র মোদীর দল। বৃহস্পতিবার কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে এই ভোটপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কেন্দ্রের ৩৭০ ধারা রদ এবং কংগ্রেস নেতাদের আটক করে রাখার প্রতিবাদে কংগ্রেসের ভোটে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তের পর বিজেপি ছাড়া কোনও বড় দল অংশগ্রহণ করেনি এই নির্বাচনে।
গেরুয়া শিবির অবশ্য জম্মুতে প্রায় এক তৃতীয়াংশ ব্লক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। জম্মুতে ১৪৮টির মধ্যে ৫২ টি ব্লক জিতেছে পদ্ম। প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরে ৩১৬টি ব্লক রয়েছে। তার মধ্যে ৩০৭টি ব্লকে আজ ভোট হয়। ২৭টি ব্লকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হয়। ২৮০টি ব্লকে বিরোধী পক্ষদের নিয়েই চলে নির্বাচন, জানান রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক শৈলেন্দ্র কুমার। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেল ২১৭টি ব্লকে বিজয়ী হয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা। ৮১টি ব্লকে জিতেছে বিজেপি। একটিতে জিতেছেন কংগ্রেস প্রার্থী।"
আরও পড়ুন, বাংলার তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচন, নির্ঘণ্ট ঘোষণা কমিশনের
বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পরে উত্তপ্ত রাজ্যে পঞ্চ ও সরপঞ্চদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে বুলেটপ্রুফ পুলিশ বাঙ্কারের গাড়িতে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছিল নির্বাচন কর্মীদের। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক শৈলেন্দ্র কুমার বলেন, "২৬ হাজার পঞ্চ এবং সরপঞ্চ ভোটদানের অধিকারী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন।" কাকাপোরা অঞ্চলের পঞ্চায়েত ঘরকে ঘিরে ছিলেন এক হাজার নিরাপত্তা রক্ষী। প্রথম এক ঘন্টায় ন'জন ভোটদাতা ভোট দেন, তাঁদের মধ্যে আটটি পরিবারের দুটি পরিবার কাশ্মীরি অভিবাসী পণ্ডিত সম্প্রদায়ের ছিলেন।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী মনোজ পণ্ডিতা (৫০), যিনি নিজে একজন কাশ্মীরি পন্ডিত, বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং নির্দল প্রার্থী উমর জানের কাছে হেরে যান। পুলওয়ামা জেলার লাজোরা গ্রামের বাসিন্দা মনোজ পণ্ডিতা বলেন, "আমি আমার গ্রামের উন্নয়নের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। গত বছর যখন আমি আমার গ্রামে গিয়েছিলাম তখন কিছুই বদল হয়নি। কোনও উন্নয়ন হয়নি। ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয়টিতে এত বছর ধরে উন্নয়ন করা হয়নি। ”
আরও পড়ুন- মুসলিমের ছোঁয়া খাবার নেবেন না, সোশ্যাল মিডিয়ার কোপে হায়দরাবাদি গ্রাহক
উত্তর কাশ্মীরের সম্বল ব্লকে পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন বিজেপি এবং চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। দুপুর ১টা নাগাদ সেখানে ভোট পড়ে ৩৭টি। আশাম থেকে বিজেপির আবদুল রশিদ খান বলেন, "আমরা এখানে দলীয় প্রার্থী দিলেও, সমর্থন করছি নির্দল প্রার্থীকেই।" তিনি আরও জানান, "কিছু পঞ্চ ও সরপঞ্চ বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ভয় পাচ্ছিলেন। তাই আমরা তাঁদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলাম।"
অন্যদিকে, মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ব্লকে বিজেপির রুহিনা জান নির্বাচিত হন বিজেপির চেয়ারপার্সন হিসেবে। ব্লকের ৩২টি ভোটের মধ্য ১১টি ভোট পেয়েছেন রুহিনা।
Read the full story in English