উপনির্বাচনের দিন করিমপুরে বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে লাথি মেরে ঝোপে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত তারিকুল শেখ ছাড়া অন্যদের নাম বিজেপির অভিযোগে ছিল না। নদিয়া উত্তরের বিজেপি সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, নির্বাচনী প্রচারে আসা রূপাঞ্জনা মিত্র ও রিমঝিম মিত্রকে হেনস্থা করার দিনও সেখানে হাজির ছিলেন এই তারিকুল।
বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে লাথি মারার ঘটনার নিন্দা করেছে এ রাজ্যের কংগ্রেস ও বিজেপি নেতারা। তবে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই লাথি প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিলেন। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্ন ছিল, "(এই লাথি) বিজেপিরই না মানুষের?" তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সহানুভূতি আদায়ের জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে যাই হোক, শেষ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতরা জামিনও পেয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: জয়প্রকাশকে লাথি, নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাল কংগ্রেস-সিপিএম
বিজেপি নেতা মহাদেব হালদারের বক্তব্য, "পুলিশ-প্রশাসন ও তৃণমূল কংগ্রেস যৌথভাবে নাটক করছে। আমরা প্রার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।" এই বিজেপি নেতার দাবি, "অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র ও রিমঝিম মিত্র করিমপুরে প্রচারে এসেছিলেন। সেদিন তাঁদের প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের হেনস্থার সময় ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন এই তারিকুল।" অভিযুক্তদের গ্রেফতারির পরই জামিন হয়ে যাওয়ায় পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মহাদেব হালদার।
অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র বলেন, "আমরা সেদিন যখন করিমপুরে গিয়েছিলাম তখন এমন ভাবে আমাদের ওপর 'অ্য়াটাক' করেছিল রীতিমত ভয় পেয়েছিলাম। কোনরকমে নিজেদের 'প্রোটেক্ট' করেছিলাম। সুপরিকল্পিত ভাবে সভা বানচাল করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাদের ছেলেদের মারধর করা হয়। জয়প্রকাশবাবুর ওপর হামলাও একেবারে পরিকল্পিত। এই ঘটনায় ৬জনকে ধরেছে। তারা ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে।" তাঁর অভিমত, "এখানে কোনও গণতন্ত্র নেই। তবে করিমপুরের মানুষ এর জবাব দেবে। এই হামলা দেখে মনে হচ্ছে ক্ষমতার অপব্য়বহার করা হচ্ছে।"
জয়প্রকাশ মজুমদারকে মারধরের ঘটনায় বিজেপি ৯জনের নামের তালিকা দিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ জানিয়েছিল। ওই তালিকায় প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে নাম ছিল তারিকুল শেখের। সেদিন বিজেপি প্রার্থীকে ধাক্কা দেওয়া, চড়, ঘুসি সবই চলে। কিন্তু অপর অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বলে বিজেপির অভিযোগ। তারিকুল ছাড়া রফিক মণ্ডল, দাউদ শেখ, নীলকান্ত সর্দারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে থানারপাড়া থানার পুলিশ।