ভাঙন-কোন্দলে জেরবার বঙ্গ বিজেপি। দল ছাড়ছেন একের পর এক নেতা, কর্মী। দলের ভাঙনে রাজ্য নেতৃত্বকেই কাঠগড়ায় তুলে সোচ্চার হচ্ছেন নেতাদের একাংশ। এই আবহে এবার বঙ্গে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। জুন মাসে রাজ্য সফরে আসছেন নাড্ডা। দলের বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন তিনি। দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি নিয়েও বেশ কয়েকটি বৈঠক করার কথা রয়েছে নাড্ডার। বাংলায় দলের নতুন রাজ্য ইউনিটের প্রথম ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেও সভাপতিত্ব করবেন বিজেপির এই শীর্ষ নেতা।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে জুন মাসে দু'দিনের রাজ্য সফরে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ৭-৮ জুন নাড্ডার বঙ্গ সফর। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নাড্ডার এবারের বঙ্গ সফরের অন্যতম কারণ হল আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ঠিক আগে এরাজ্যে বিজেপির ভাঙন শীর্ষ নেতাদের অস্বস্তির অন্যতম প্রধান কারণ। নাড্ডার এবারের সফরের মূল্য লক্ষ্যই হল কোন্দল মিটিয়ে বঙ্গে দলের বিধায়ক, সাংসদদের ধরে রাখা।
নাড্ডার আসন্ন বঙ্গ সফর নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ''নাড্ডাজি বলেছিলেন যে তিনি জুন মাসে বাংলায় আসবেন। দলের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্যই তাঁর সফর।'' এদিকে, ২০২৪-র আগে দলের বুথ-স্তরের সাংগঠনিক সেট-আপকে শক্তিশালী করতে দলে দায়িত্ব বেড়েছে দিলীপ ঘোষের। বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন এই সভাপতিকে বিহার, ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, মেঘালয়, অসম, ওড়িশা, ত্রিপুরা এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে দলীয় সংগঠন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- দিলীপকে ‘বড় দায়িত্ব’ দলের, ‘অপসারণ না উত্থান’ খোঁচা তথাগতর
দিল্লিতে সম্প্রতি বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই দিলীপ ঘোষকে ভিনরাজ্যে দলের কাজে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নাড্ডাদের এই সিদ্ধান্তের মূল্য লক্ষ্যই ছিল দিলীপ ঘোষকে বঙ্গের সীমা ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যে দলের কাজে যুক্ত করা, যাতে বাংলায় দলের সাংগঠনিক বিষয়গুলি পরিচালনার পুরোপরি দায়িত্ব সামলাতে পারেন সুকান্ত মজুমদার। দিলীপ ঘোষের রাজ্যে থাকাকালীন সেটা সম্ভব হচ্ছিল না বলেই জানিয়েছে সূত্রটি।
বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য সভাপতি পদে মনোনীত করে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দিলীপ ঘোষকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি করা হয়। তবে দলে দায়িত্ব বাড়লেও এতদিন বঙ্গের মাটি আঁকড়েই পড়েছিলেন দিলীপ।
আরও পড়ুন- কয়লা পাচারকাণ্ডে অভিষেক ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল বিধায়ককে তলব CBI-এর
এরাজ্যে বিজেরি সব কর্মসূচিতেই দেখা যেত তাঁকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দিলীপের ছায়ায় কার্যত ঢাকা পড়ে যাচ্ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সেই কারণেই এরাজ্যে দলের কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রেও বেশ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল তাঁকে। সব দিক ভেবেই এবার তাই দিলীপকে ভিনরাজ্যে পাঠিয়ে সুকান্তকে বঙ্গে কার্যত ফ্রি-হ্যান্ড দিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।