Advertisment

Premium: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পদত্যাগ, দ্বিধাবিভক্ত আইনজীবী মহল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েই প্রশ্ন

Justice Abhijit Gangopadhyay Resign: এই পদত্যাগ ঘিরে দ্বিধাভিভক্ত আইনজীবী মহল। অনেকে আবার এই ঘটনায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও বিচারপতি পদত্যাগ করছেন, সেটা কোনও নতুন ঘটনা নয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Calcutta HC Judge Abhijit Ganguly, Abhijit Gangopadhyay Resign, Justice Abhijit Ganguly

Justice Abhijit Gangopadhyay Resign: চাকরি প্রার্থীদের একাংশ তাঁকে 'ভগবান'-এর আসনে পর্যন্ত বসিয়েছিলেন। (ফাইল ছবি)

Calcutta HC Justice Abhijit Ganguly: রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পদত্যাগ করেছেন। তাঁর এই পদত্যাগ ঘিরে দ্বিধাভিভক্ত আইনজীবী মহল। অনেকে আবার এই ঘটনায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও বিচারপতি পদত্যাগ করছেন, সেটা কোনও নতুন ঘটনা নয়।

Advertisment

অতীতেও হয়েছে

১৯৬৭ সালে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কোকা সুব্বারাও কংগ্রেসের জাকির হুসেনের বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থী হিসাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অবসর গ্রহণের তিন মাস আগে পদত্যাগ করেছিলেন। অবসর নেওয়ার মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বাহারুল ইসলাম ১৯৮৩ সালে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে অসমের বরপেটা থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পদত্যাগ করেছিলেন।

তারপরও প্রশ্ন উঠছে

তারপরও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগদানের জন্য পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তিনি এমন একটা সময়ে পদত্যাগ করেছেন, তখন আইনজীবী মহল সরকারপক্ষ এবং বিরোধী, এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আদেশ, তাঁর মিডিয়া সাক্ষাত্কার, ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার নেতাদের বিরুদ্ধে খোলা তরবারি হয়ে উঠেছিল। তাঁর আদালত কক্ষটিও আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারপতির তীব্র বাদানুবাদের সাক্ষী হয়েছে। এমনকী, বিচারপতি নিজেই তাঁর সিনিয়র সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের একজনের বিরুদ্ধে 'রাজনৈতিক দল'-এর হয়ে কাজ করার অভিযোগ করেছেন।

বিচারপতি সুব্বারাওয়ের সঙ্গে মিল

বিচারপতি সুব্বারাও এমন একটি সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যখন বিরোধীরা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সততা আর বিশ্বাসযোগ্যতার কোনও প্রতীককে খুঁজছিলেন। এজলাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মেজাজ, তাঁর প্রশ্নবাণ, তাঁর সাক্ষাৎকার, মন্তব্য, পর্যবেক্ষণ, বাক্যবিনিময় তেমনই এক প্রতীক হিসেবে তাঁকে তুলে ধরেছে। চাকরি প্রার্থীদের একাংশ তাঁকে 'ভগবান'-এর আসনে পর্যন্ত বসিয়েছিলেন।

বিভক্ত আইনজীবী মহল

এই পরিস্থিতিতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে নামার জন্য বিচারপতির আসন থেকে পদত্যাগ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত আইনজীবী মহল। বিজেপিপন্থী আইনজীবীদের একাংশ বেজায় খুশি হলেও, প্রবীণ আইনজীবী এবং কলকাতা হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অরুণাভ ঘোষ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত বিচারবিভাগ সম্পর্কে একটি খারাপ বার্তা পাঠাবে। যখন কোনও বিচারপতি এই কাজ করেন। তখন একটি খারাপ বার্তা পৌঁছয়। তবে তিনি আদালতে মোটেও নিরপেক্ষ ছিলেন না। এই নিরপেক্ষতা একজন বিচারক বা বিচারপতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।'

আরও পড়ুন- মাওবাদী কার্যকলাপের অভিযোগ, বেকসুর খালাস দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক

শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর

একজন প্রবীণ আইনজীবীর অভিযোগ, 'এর অর্থ হল, একজন বিচারপতি তাঁর অদৃশ্য রাজনৈতিক এজেন্ডা পূরণ করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করেছেন।' জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পর ৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রোস্টার পরিবর্তন করা হয়েছিল। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাঁর এজলাস থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আইনজীবী মহলের একাংশ যাকে তাঁর 'ডানা ছাঁটা'র সঙ্গেও তুলনা করেছিলেন।

High Court Lawyer Abhijit Ganguly Justice
Advertisment