জল্পনার আবসান। বাংলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে বহাল থাকছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এতদিন তাঁর সঙ্গে সহ-পর্যবেক্ষক হিসাবে ছিলেন অরবিন্দ মেনন। তিনিও ওই পদেই থাকছেন। সঙ্গে সহকারী পর্যবেক্ষক হিসাবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যকে। শুক্রবার বিজেপির তরফে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে। আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা ভোট। আপাতত বাংলা দখলই গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ। তাই বিধানসভা ভোটের মাত্র কয়েকমাস আগে দলের তরফে বাংলায় পর্যবেক্ষক হিসাবে ফের কৈলাসকে নিযুক্তি অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন ও অমিত মালব্যদের নিয়োগ করে দলের নেতা, কর্মীদের কাছে বেশ কয়েকটি বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন নাড্ডা, শাহরা। গত পাঁচ বছর ধরেই বিজেপির হয়ে বাংলার দায়িত্বে কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এর মধ্যে এ রাজ্যে দল কলেবরে বেড়েছে। এসেছে নির্বাচনী সাফল্য। গত লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গে রেকর্ড ভোট বাড়িয়ে ১৮ আসনে জয় পেয়েছেন গেরুয়া প্রার্থীরা। এরপর অন্যদল থেকে বিজেপিতে যোগদান বেড়েছে। বঙ্গ বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতেও কৈলাসের উপস্থিতি নজরে পড়ে। তাই বিধানসভা ভোটের আগে পর্যবেক্ষক বদল করে দল পরিচালনার ছন্দে ব্যাঘাত ঘটাতে চাননি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
অন্যদিকে, মুরলীধর সেন লেনে কান পাতলেই এখন শোনা যায় গোষ্ঠীকোন্দলের গুঞ্জন। কয়েক সপ্তাহ আগেই মুকুল-দিলীপ দ্বন্দ্বে জেরবার হয়েছিল রাজ্য বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। সেই দায়িত্বও সুচারুভাবে সামলেছিলেন কৈলাস। তাই তাঁকে ফের পর্যবেক্ষক পদে নিয়োগ করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে উপযুক্ত বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পদ্ম শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সহকারী পর্যবেক্ষক পদেও অরবিন্দ মেনন ভাল করেই তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মনে করেছেন নাড্ডা-অমিত শাহরা। গোষ্ঠী বিরোধ রদ করতে তিনিও মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তাই ভোটের আগে মেননে ভরসা রেখেছে দল।
দলের হয়ে বাংলায় সহকারী পর্যবেক্ষক পদে অমিত মালব্যর নিয়োগ অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বলেই মনে করা হচ্ছে। এই নিয়োগ বাংলা দখলের তীক্ষ্ণ ব্লুপ্রিন্ট বলেই বিবেচিত। অমিত বিজেপির আইটি সেলের প্রধান। দেশজুড়ে সোশাল মিডিয়ায় দলের পক্ষে প্রচারের দায়িত্ব তাঁরই কাঁধে। কোভিড পরিস্থিতিতে সোশাল মিডিয়ায় প্রচাই অন্যতম হাতিয়ার। তাই এবার বিধানসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরের হয়ে একদিকে প্রচারে ঝড় তোলা ও অন্যদিকে শাসক তৃণমূলের বিভিন্ন অভিযোগ খণ্ডনের লক্ষ্যেই অমিত মালব্যকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পাশাপাশি, বাংলার দুই সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদকেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আনা হয়েছে। বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে সিকিমের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের তরফে প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের কো-ইনচার্জ করা হয়েছে বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারকে। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ সামলানো অনুপম হাজরাকে আরেক প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের কো-ইনচার্জের পদে নিয়োগ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন