Advertisment

'তৃণমূল না এনআরসি-র কাছে হেরে গেলাম'

তৃণমূল প্রার্থীর প্রতিক্রিয়া, "আমার হয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, মন্ত্রীরা, বুথ স্তরের কর্মীরা এবং প্রশান্ত কিশোরের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন, আর সে জন্যই জিততে পেরেছি। এই জয়ের পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়েনের রাজনীতি এবং এনআরসি, দু'টিই কাজ করেছে"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
TMC

কালিয়াগঞ্জে জয় পেল তৃণমূল কংগ্রেস।

দেশভাগের ক্ষত বুকে বেঁচে থাকা বাংলায় এনআরসি-ই কাল হল পদ্মশিবিরের, অন্তত কালিয়াগঞ্জে হারার এটাই কারণ বলে জানাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী কমল চন্দ্র সরকার। মাত্র মাস ছয়েক আগে লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে এই বিধানসভায় ছাপান্ন হাজারের কিছু বেশি ভোটে জিতেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। অথচ, বৃহস্পতিবার উপনির্বাচনের ফলে এখানে তৃণমূল প্রার্থী তপনদেব সিং-এর কাছে ২৩০৪ ভোটে পরাজিত হতে হল বিজেপি প্রার্থী কমল চন্দ্র সরকারকে। বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশের পর কমল চন্দ্র সরকার সংবাদমাধ্যমে বললেন, "এনআরসি-র জন্যই হেরে গেলাম"। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থীর প্রতিক্রিয়া, "আমার হয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, মন্ত্রীরা, বুথ স্তরের কর্মীরা এবং প্রশান্ত কিশোরের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন, আর সে জন্যই জিততে পেরেছি। এই জয়ের পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়েনের রাজনীতি এবং এনআরসি, দু'টিই কাজ করেছে"।

Advertisment

কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোট গণনায় এদিন প্রথম কয়েকটি রাউন্ডে রীতিমতো ব্যবধান বাড়াতে বাড়াতে এগিয়ে যাচ্ছিল বিজেপি। কিন্তু তারপর ক্রমাগত এগিয়েছে কেবল তৃণমূলই। আর তার জেরেই ২৩০৪ ভোটে জোড়াফুলের কাছে পরাস্ত হতে হল পদ্মফুলকে। তিন কেন্দ্রের মধ্যে কালিয়াগঞ্জে বিজেপির হারকেই সবচেয়ে তাত্ৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবং এ জন্যই এনআরসি ভীতিই যে সবথেকে বড় ফ্য়াক্টর সে কথাও মেনে নিচ্ছেন অনেকেই।

মাত্র ৬ মাস আগে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে বিপুল জয় পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী তথা বর্তমানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। সেই ভোটে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে এগিয়ে ছিলেন প্রায় ৫৭ হাজার ভোটর ব্য়বধানে। কিন্তু, কী এমন ঘটল যে সেই বিশাল ব্য়বধান ঘুচিয়ে উপনির্বাচনে জয় পেল ঘাসফুল শিবির? পদ্ম শিবিরে এখন শুধু এই একটাই প্রশ্ন।

বাংলায় নাগরিক পঞ্জি লাগু করা নিয়ে চরম বিতর্ক চলছে। বিজেপি ছাড়া বাংলার প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলই এনআরসি-র বিরোধিতা করেছে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এনআরসি বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। রাজ্য়ব্য়াপী আন্দোলন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। কোনও মতেই এরাজ্য়ে এনআরসি হবে না বলে মমতা ঘোষণা করেছেন।

এদিকে, উত্তরদিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ বাংলাদেশ সামান্তবর্তী বিধানসভা কেন্দ্র। এই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বাংলাদেশ লাগোয়া। এর আগে এই সব সীমান্তবর্তী জেলায় নানাভাবে রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। কিন্তু এনআরসি নিয়ে বিজেপির একরোখা মনোভাব যে এই এলাকার ভোটাররা মেনে নিতে পারেননি তা এদিনের ফলাফলে প্রমাণিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এই ভোটের ফলাফলে কালিয়াগঞ্জের মানুষ জানান দিল এনআরসি লাগু হোক তাঁরা তা চাইছে না, আপাতত এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

tmc
Advertisment