করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ২০১৬ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তার আগে এই কেন্দ্র একটানা সিপিএমের দখলে ছিল। এবারের উপনির্বাচনেও করিমপুরের দখল কায়েম রাখল তৃণমূল। বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছিল দলের রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই এলাকায় দিনভর প্রচারও করেছে। তা সত্বেও ২৪ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরে গেল বিজেপি। কিন্তু, কেন এই হার?
কালিয়াগঞ্জের মতো করিমপুরও একেবারেই বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বিধানসভা কেন্দ্র। একইসঙ্গে এই কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক মুসলিম ভোটারও রয়েছে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে ছিল সাড়ে ১৩ হাজার ভোটে। এ বারের নির্বাচনেও সেই ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল ঘাসফুল শিবির।
এনআরসি নিয়ে বিজেপির একরোখা মনোভাব ও তৃণমূলের এনআরসি বিরোধিতা এই সীমান্ত বিধানসভায় প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কালিয়াগঞ্জের মতো এই কেন্দ্রেও এনআরসি একটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ফলাফলের মাধ্যমে গেরুয়া শিবিরকে একটা বার্তা দিল সীমান্তবর্তী করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জের ভোটাররা।
তবে কী শুধুই এনআরসি ইস্যু?
করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মুসলিম ভোটাররা কাদের দিকে যায় সেদিকেও লক্ষ্য ছিল ভোট বিশেষজ্ঞদের। দেখার বিষয় এক্ষেত্রেও সংখ্যালঘুরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিই ভরসা রেখেছেন। লোকসভা নির্বাচনে ৩৪ থেকে ২২টি আসনে নেমে যাওয়ার পরও মমতা সাংবাদিক সম্মলনে সরসারি সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার কথাই বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "যে গরু দুধ দেয় তার লাথি খাওয়া ভাল"। মমতার এমন মন্তব্য নিয়ে বিস্তর জলঘোলাও হয়েছিল। কিন্তু, সংখ্যালঘু প্রধান করিমপুরের ভোটাররা যে শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিরাশ করেননি তা এদিন স্পষ্ট হয়ে গেল। পাশাপাশি ভোটের দিন সাতসকালে বিজেপি প্রার্থীকে লাথি মারার দৃশ্য় ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। সমালোচনায় মুখর হয়েছিল দলমত নির্বিশেষে সব পক্ষই। কিন্তু, এই ঘটনাও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটারদের মনে যে তেমন বিশেষ একটা রেখাপাত করেনি তাও এদিনের ফলাফল দেখিয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।