তৃণমূলে ভাঙন অব্যাহত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভার ২৪ ঘণ্টার মাথায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন কাঁচড়াপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুদামা রায়। শনিবার বিজেপি নেতা মুকুল রায়, সাংসদ অর্জুন সিং, সাংসদ শান্তনু ঠাকুরদের উপস্থিতিতে পদ্ম পাতাকা হাতে তুলে নিলেন সুদামা। এদিন এই সভায় রানাঘাট ও হরিনঘাটা পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, শুক্রবার কাঁচরাপাড়ায় সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সংগঠনকে মজবুত করার বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী। মমতার সেই বার্তার পরই খেল দেখালেন মুকুল রায়।
লোকসভার ফল বেরনোর পর দল ছাড়তে খুব বেশি দেরি করেননি বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। মুকুলপুত্র সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলনেত্রী তোপ দেগেছিলেন বাবাকে 'গদ্দার' বলায়। তারপরই তৃণমূল থেকে তাঁকে ৬ বছরের জন্য় বহিষ্কার করা হয়। দিল্লিতে গিয়ে শুভ্রাংশু বিজেপিতে যোগ দেয়। সেই সময় কাঁচরাপাড়া পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এদিন বিজেপিতে নাম লেখালেন সুদামা রায়।
শুধু সুদামা রায় নয়, এদিনের এই সভাতে হরিনঘাটা পুরসভার অধিকাংশ কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেন। যোগ দিয়েছেন রানাঘাটা পুরসভার কাউন্সিলররা। সভায় মুকুল রায় দাবি করেন, এবার থেকে নদিয়া জেলার রানাঘাট ও হরিনঘাটা পুরসভা বিজেপির দখলে চলে এল। ওই কাউন্সিলরদের হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দেওয়া হয়।
কাঁচরাপাড়ার এই সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমোকে তুলোধোনা করেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। শুক্রবার এই মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন মুকুল রায়কে তৃণমূলে ফিরিয়ে নিয়ে তিনি ভুল করেছিলেন। সেই বিশ্বাস তার করা উচিত হয়নি।এর জবাব দিতে গিয়ে এদিন বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, মমতা তৃণমূলে নেওয়ার কে? তৃণমূল দলটা আমি তৈরি করেছি। কংগ্রেস যখন তাকে তাড়িয়ে দিয়েছিল সেই দলে আমরা তাকে গ্রহণ করেছিলাম। কতিপয় কিছু মানুষ তৃণমূল তৈরি করেছিল। এখন সেটা পিসি,ভাইপোর দল হয়ে গিয়েছে। মুকুল রায়ের অভিযোগ কালীঘাট চত্বরে ৩৫ প্লট রয়েছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পরিবারের। এই মাঠে মমতা বলেছিলেন বখাটে ছেলেরা দলে যোগ দিলে তাদের চাকরি দেওয়া হবে। মুকুল রায় এদিন পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এই সরকার একজনের নাম বলুক যাকে তারা চাকরি দিয়েছে।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বাঙালি,বিহারী ধর্মের কথা জাতের কথা, ভাষার কথা বলছেন। একেবারেই এটা ঠিক নয়। রোহিঙ্গা নিয়ে সন্দেশখালিতে খুন করা হয়েছে। এসব ঘটনারও এনআইএ তদন্ত প্রয়োজন। অর্জুন সিং এর বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেডিকেল পরীক্ষা করানো দরকার। তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে একটা জনস্বার্থের মামলা করা হবে বলেও তিনি জানান।
বিজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের বক্তব্য, গতকাল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জনসভায় বাইরে থেকে বাসে করে লোক আনা হয়েছিল। স্থানীয়রা কেউ সেই সভায় যোগ দেননি। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মী সভা হয়েছিল বলা যায়। তবে এদিনের সভায় স্থানীয় বাসিন্দারাই ভিড় করেছিল বলে শুভ্রাংশুর দাবি। শুভ্রাংশু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসুস্থ রোগী বলে কটাক্ষ করেছেন।