কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল মহারাষ্ট্র বিজেপির কাছে একটা বার্তা। কর্ণাটকের মতই মহারাষ্ট্রে বিরোধীর সরকার ফেলে নিজেদের সরকার গড়েছে বিজেপি। শনিবারই হাতেনাতে যার ফল পেয়ে গিয়েছে পদ্মশিবির। কর্ণাটকবাসী বোঝাল, জনমত উপেক্ষা করে সরকার ফেলার কাজটা ঠিক হয়নি। কর্ণাটকের পাশের রাজ্য মহারাষ্ট্র। আগামী বছর শুধু লোকসভাই না। মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনও আছে।
এই পরিস্থিতিতে কর্ণাটকে বিজেপির ফল মহারাষ্ট্রের নেতাদের কাছে যে বার্তা পাঠাল, তার একটা অর্থ হল- কৌশল বদলানো দরকার। ড্রয়িং রুমের ক্যালকুলেশন নতুন করে শুরু করতে হবে মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতাদের। কারণ, কর্ণাটকে কংগ্রেসের সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি দুটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে শুরু করেছে। তারমধ্যে প্রথম প্রশ্নটা হল, বাসভরাজ বোম্মাইয়ের সরকারের পরাজয় কি অপারেশন লোটাসের ব্যর্থতা? আর দ্বিতীয় প্রশ্নটা হল, ২০২৪-এর বিধানসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্র বিজেপিরও কি তার প্রতিবেশী কর্ণাটকের মত পরিণতি হবে?
বিজেপি সূত্রে খবর, দলের মহারাষ্ট্র রাজ্য কমিটি কর্ণাটকের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে কয়েক দিনের মধ্যে একটি বৈঠক করবে। ভোটকৌশল নির্ধারণের পাশাপাশি, ভোট পর্যন্ত দলের অবস্থান নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। এই বৈঠক সম্পর্কে মহারাষ্ট্র বিজেপির নেতা তথা দলের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ভিখে পাতিল বলেছেন, 'প্রতিটা রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নিজস্বতা আছে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় সমস্যা থেকে নেতৃত্ব, সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেকথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতারা প্রস্তুতির ফলাফল বিশ্লেষণ করবেন। কোনও সংশোধনের দরকার পড়লে, শীর্ষ নেতৃত্ব তা নেবেন। কর্ণাটকের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের নির্বাচনকে গুলিয়ে ফেললে হবে না।'
পাতিল যাই বলুন, মহারাষ্ট্র বিজেপি নেতাদেরই একাংশ ঠারেঠোরে মেনে নিচ্ছেন যে কর্ণাটক আর মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ব্যাপক মিল আছে। কর্ণাটকে ২০১৮ আর মহারাষ্ট্রে ২০১৯ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। কর্ণাটকে ২২৪ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু, ১৫ কংগ্রেস আর ২ জেডি (এস) বিধায়ক পদত্যাগ করায় সরকার পড়ে যায়। ওই বিধায়করা বিজেপির হয়ে উপনির্বাচনে প্রার্থী হন। আর, জয়ী হন। যার ফলে, বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা ম্যাজিক ফিগার ১১২ অর্জন করে কর্ণাটকের কুর্সি দখল করে।
আরও পড়ুন- কর্ণাটকের জয় দেশজুড়ে পালন কংগ্রেসের, তারই মধ্যে আচমকা বার্তা মোদীরও
সেভাবেই মহারাষ্ট্রেও বিজেপি-শিবসেনা জোট গড়ে নির্বাচনে জয়ী হয়। বিজেপি ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ১০৫ আসন পায়। কিন্তু, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে হাত মেলানোয় বিজেপি বাধ্য হয় বিরোধী আসনে বসতে। এরপর ২০২২ সালে একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্ব শিবসেনার বিধায়কদের একাংশকে ভাঙিয়ে এনে নতুন সরকার গঠন করে।