২০ ফেব্রুয়ারি কর্নাটকের শিবমোগায় বজরং দলের কর্মী খুন স্থানীয় গন্ডগোলের ফল বলেই মনে করছে পুলিশ।
দীর্ঘস্থায়ী একটি শত্রুতা থেকে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারমা তদন্তকারী অফিসারদের। হর্ষ হত্যায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া ১০ জন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আদালতের নির্দেশে আপাতত আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত ধৃতরা পুলিশ হেফাজতেই থাকবে। হর্ষ খুনে আরও কেউ জড়িত কিনা বা এই খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা ধৃতদের দফায় দফায় জেরা করে তা জানার চেষ্টায় তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা।
কর্নাটকের স্কুল-কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরার উপর বিধি-নিষেধ এবং তার জেরে চলা বিক্ষোভের মধ্যেই হঠাৎ করে শিবমোগায় খুন হন বজরং দলের কর্মী হর্ষ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে হর্ষের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলাম ধর্মের অবমাননা করে এই এলাকার মুসলিমদের প্রতি বিষোদগার করার অভিযোগ ছিল। এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার এপ্রসঙ্গে বলেন, ''খুনের তদন্তে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও উদ্দেশ্য পাওয়া যায়নি। এটি এই এলাকার হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী এবং মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে একটি দীর্ঘ প্রতিদ্বন্দ্বিতার অংশ বলেই মনে হচ্ছে।'' তবে হর্ষ খুন নিয়ে তদন্ত এখনও চলছে বলেও জানিয়েছেন ওই পুলিশ আধিকারিক।
উল্লেখ্য, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ডোড্ডাপেট থানার শিবমোগায় কুপিয়ে খুপন করা হয় বজরং দলের কর্মী হর্ষকে। সেই সময় কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে হর্ষ রেস্তোরাঁয় যাচ্ছিলেন। হর্ষের জন্য আগে থেকেই ওই এলাকায় অপেক্ষা করছিল দুষ্কৃতীরা। হর্ষকে দেখেই প্রায় তুলে নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্রের কোপে মৃত্যু হয় যুবকের। পরের দিন সকালে হর্ষের শেষকৃত্যের মিছিলকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর থেকে শুরু করে আগুন লাগানোর ঘটনায় উত্তাল হয় শিবমোগা।
আরও পড়ুন- রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ: নীরব কংগ্রেস, তবে হাত শিবিরের নেতাদের বিতর্ক জারি
হর্ষ খুনে প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ কাসিফ। খুনের বেশ কয়েকজন সাক্ষীর বয়ান থেকেই কাসিফকে চিহ্নিত করা হয়। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে কাসিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ মেলে। একে একে গ্রেফতার করা হয় বাকি বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঠিক কী কারণে বজরং দলের কর্মী হর্ষকে খুন করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নিহতের কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে এলাকায় তার শত্রু বেড়ে গিয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে হিজাব ইস্যুতে বিতর্ক বাড়ে। হিজাব নিয়েও প্রতিবাদ করেছিলেন হর্ষ।
এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ''এই এলাকায় হিন্দু ও মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে এর আগেও অনেক সংঘর্ষ হয়েছে। ৬ মাস আগে আদালত চত্বরে হর্ষ এবং একজন অভিযুক্তের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ড সেই ঝগড়ার ফলও হতে পারে। এটা স্থানীয় শত্রুতার ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে।''
Read full story in English