সোমবার কর্ণাটকের দুই বিধায়ক ইস্তফা এবং সমর্থন সরিয়ে নেওয়ায় সংকট বাড়ল কংগ্রেস-জেডি জোট সরকারের। দু'দল থেকে ৩০ জন বিধায়ক মন্ত্রিসভায় রদবদলের দাবিতে ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে কংগ্রেস-জনতাদল জোট সরকার কার্যত প্রশ্ন চিহ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহেই ১৩ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছিলেন জোট সরকারে। তারপর থেকেই সংকটে পড়েছিল কুমারাস্বামী সরকার। সরকারের টালমাটাল অবস্থার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারাস্বামী ১০ দিনের মার্কিন সফর থেকে দেশে ফেরার পরেই তাই বিমানবন্দরেই নিজের দল জেডি(এস) নেতা এবং শরিক দল কংগ্রেসের সঙ্গে বসালেন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।
কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতৃত্ব যদিও জানিয়েছে, মন্ত্রিসভায় রদবদল হলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল জানিয়েছেন, "কয়েকজন বিধায়কের কিছু ক্ষোভ রয়েছে। দলের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে তারা স্বেচ্ছায় দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন"।
যে সমস্ত রাজ্যে বিরোধী দল ক্ষমতায় রয়েছে, সে সমস্ত সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে বিজেপি, কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের ১১ জন বিধায়কের ইস্তফার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ।বিজেপির বিরুদ্ধে শনিবার রাতে ওই বিধায়কদের প্রাইভেট জেটে করে মুম্বই নিয়ে যাওয়ার এবং সেখানে একটি হোটেলে তাঁদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।এখনও পর্যন্ত শাসক জোটের ১৪ বিধায়কের ইস্তফা দেওয়ার খবর মিলেছে।লোকসভা নির্বাচনের পর জনতা দল সেকুলারের প্রধান তথা কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামীর ব্যক্তিগত সফরে আমেরিকা রওনা হওয়ার পরেই ওই ঘটনা ঘটেছে। তবে দলের মধ্যেকার এই সাম্প্রতিক সঙ্কটের খবর পেয়ে খুব তাড়াতাড়ি আমেরিকা থেকে বেঙ্গালুরু ফিরে আসছেন কর্নাটক মুখ্যমন্ত্রী,তাঁর সঙ্গে ফিরছেন সফরসঙ্গী প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি দীনেশ গুন্ডুরাও।
দিল্লিতে বিজেপির সূত্রে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস খবর পেয়েছে পদত্যাগের খবর আনুষ্ঠানিক ভাবে স্পিকার ঘোষণা করলে তবেই বিকল্প সরকার গঠনে এগোনো যাবে। যদিও দলের ভেতরে প্রস্তুতি শুরু হয়েই গিয়েছে।
কংগ্রেসে পদত্যাগের জোয়ার, দায়িত্ব ছাড়লেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
বিজেপির সাধারণ সচিব পি মুরলিধর রাও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, “যা হবে, সব কিছুর জন্য প্রস্তুত রয়েছি আমরা। তবে তাড়াহুড়ো করতে চাইছি না। আমরা স্পিকার এবং গভর্নরের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি যাতে কোনও ধোঁয়াশা না থাকে”।
শনিবার ১০ কংগ্রেস এবং ৩ জেডিএস বিধায়ক স্পিকারের কাছে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এরপর তাঁরা রাজ্যপাল ভাজুভাই ভালার কাছে সঙ্গে দেখাও করেন। এর আগে গত ১ জুলাই আরও এক কংগ্রেস বিধায়ক আনন্দ সিং পদত্যাগ করেছিলেন।
স্পিকার যদি এই ১৪ জন বিধায়কের ইস্তফা গ্রহণ করেন, তাহলে নিশ্চিতভাবেই ২২৪ সদস্যের বিধানসভায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে শাসক কংগ্রেস-জেডিএস জোট। আপাতত শাসকজোটের মোট বিধায়ক সংখ্যা ১১৮। এর মধ্যে কংগ্রেসের ৭৮, জেডিএসের ৩৭ জন এবং বিএসপির ১ জন। সঙ্গে নির্দল ২ বিধায়ক। ইস্তফা গৃহীত হলে শাসকজোটের সংখ্যা কমে হবে ১০৪। অন্যদিকে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১০৫।
বিধায়কেরা যখন পদত্যাগ করছিলেন, সে সময় স্পিকার উপস্থিত ছিলেন না। পরে তিনি জানান, সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে বিধানসভায়। স্পিকারের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় বিদ্রোহী বিধায়কেরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, ওই ১৪ বিধায়ক শনিবারই একটি চার্টাড ফ্লাইটে মুম্বইয়ের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছেন।