সন্ধ্যে ৬টার মধ্যে সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলা হয়েছিল। দ্বিতীয়বারেও ডেডলাইন মিস! কর্ণাটক সমস্যার ফয়সালা হল না শুক্রবারেও। এ দিন বিকেল ৬ টায় দ্বিতীয়বার নির্ধারন করে দেন কর্ণাটকের রাজ্যপাল বাজুভাই ভালা। কিন্তু সেই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করে উল্টে আস্থা ভোট করানো নিয়ে রাজ্যপালের পাঠানো চিঠিকে 'প্রেমপত্র' বলে কটাক্ষ করলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী।
আর কতদিন সময় লাগবে কুমারাস্বামীর কাছে জানতে চান স্পিকার। তার উত্তরে কুমারাস্বামী বলেন আগামী সোমবারের অধিবেশনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
কর্ণাটক বিধানসভায় আস্থা ভোট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী বলেন, এ ব্য়াপারে রাজ্যপালের নির্দেশ মানতে তাঁরা বাধ্য নন। বিধানসভার স্পিকারই শেষ কথা। সঙ্গে এও বলেন যে ১৪ মাস পর চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছনো গেছে। তাই এখন আলোচনা করতে দেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে পাল্টা কটাক্ষ করে বিজেপি।
যত সময় এগোচ্ছে, ক্রমশই নাটক জমে উঠছে কর্ণাটকে। নিজের সরকার কি ধরে রাখতে পারবেন কুমারস্বামী? কর্ণাটকের সেই ক্লাইম্যাক্স দৃশ্য আজই স্পষ্ট হয়ে যাবে, ভাবা হয়েছিল এমনটাই। কথা ছিল আজ দুপুর দেড়টার মধ্যে বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে কুমারস্বামী সরকারকে। কিন্তু দু'পক্ষের তর্ক বিতর্কের মাঝে সময়সীমা বাড়ানো হল সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত।
১৭ জুলাই দেশের শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছিল, কর্ণাটকের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আস্থা ভোটে বাধ্য করা যাবে না। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানাল কর্ণাটক কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবারই কর্ণাটক বিধানসভায় আস্থা ভোটের কথা ছিল। কিন্তু নানা টালবাহানায় শেষ পর্যন্ত বিধানসভার অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়। এরপরই আসরে নামেন রাজ্যপাল বাজুভাই বালা। শুক্রবার দুপুর দেড়টার মধ্যে আস্থা ভোট করতে হবে, কুমারস্বামী ও বিধানসভার অধ্যক্ষকে চিঠি লিখে এমন নির্দেশই দেন রাজ্যপাল।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, "১৫ জন সদস্য আমার সঙ্গে দেখা করে ইস্তফাপত্র দিয়েছেন...প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, আপনার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে...বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক কাঠামোয় এটা হতে পারে না।" কুমারস্বামীকে পাঠানো রাজ্যপালের চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে কর্ণাটকের অধ্যক্ষকেও। এর আগে আস্থা ভোট সম্পন্ন করতে অধ্যক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: কর্ণাটক সংকট: আস্থা ভোট নিয়ে এবার মতবিরোধ বিজেপিতে
এদিকে, শুক্রবার পর্যন্ত বিধানসভা মুলতবি করা নিয়ে অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসরে নেমেছে বিজেপি। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিধানসভা ভবনে রাত্রিযাপনের কথা ঘোষণা করেন বিজেপি নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বিধানসভায় আস্থা ভোট নিয়ে ভালভাবে আলোচনাই করা যায় নি, অন্যান্য ইস্যু টেনে আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া বিলম্বিত করেছে বলে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আর এরই প্রতিবাদে বিধানসভাতেই রাত্রিযাপনের সিদ্ধান্তের কথা জানান ইয়েদুরাপ্পা।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস-জেডিএস সরকারের হাতে রয়েছেন ১১৭ জন বিধায়ক। এঁদের মধ্যে কংগ্রেসের হাতে ৭৮ জন, জেডিএসের ৩৭, বিএসপির হাতে ১ ও আরেকজন মনোনীত। অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষ বিজেপির হাতে রয়েছেন ১০৭ জন বিধায়ক। ১৫ জন বিধায়কের ইস্তফা গৃহীত হলে, কুমারস্বামী সরকারের হাতে থাকবেন ১০১ জন বিধায়ক। যার জেরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে ১৪ মাসের কুমারস্বামী সরকার।
Read the full story in English