কর্ণাটকে নাটকের ‘দ্য এন্ড’ যেন হচ্ছেই না। যত দিন গড়াচ্ছে, ততই নাটকীয় মোড় নিচ্ছে দক্ষিণের এই রাজ্যে। সোমবারও কর্ণাটক বিধানসভায় আস্থা ভোট করাতে পারেননি অধ্যক্ষ রমেশ কুমার। আবারও আস্থা ভোটের ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হল। আজ সন্ধে ৬টার মধ্যে কর্ণাটক বিধানসভায় আস্থা ভোট করার ডেডলাইন দেওয়া হয়েছিল। বেঙ্গালুরুতে মঙ্গল-বুধ বারে ৪৮ ঘণ্টার জন্য জারি হল ১৪৪ ধারা। মুখ্যমন্ত্রী জানালেন পদত্যাগ পত্র সঙ্গেই এনেছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে আস্থা ভোট নিয়ে 'অনিচ্ছাকৃত দেরি'র জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারাস্বামী। গত চার দিন ধরে আস্থা ভোট নিয়ে বিধানসভায় বিতর্ক পর্বে তাঁর পদ ছেড়ে না দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল বলে নিজেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, "আমি আমার রাজ্যের মানুষ এবং অধ্যক্ষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আস্থা ভোটের ফলাফল কী হবে জানতাম না, আজ সঙ্গে পদত্যাগপত্র নিয়েই এসেছিলাম"।
সোমবারই আস্থা ভোট করা হবে বলে জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ। কিন্তু তা সত্ত্বেও নানা টালবাহানায় সোমবারও আস্থা ভোট করা যায়নি কর্ণাটক বিধানসভায়। এদিকে, অবিলম্বে আস্থা ভোটের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন দুই নির্দল বিধায়ক। সেই মামলার শুনানি আজ। সোমবার বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী অনুরোধ করে বলেন, ১৫ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ককে হুইপ করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দেয়, তা জানার পরই আস্থা ভোট করা হোক। এদিকে, আস্থা ভোট করা নিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমাকে প্রতিশ্রুতি ভাঙতে বলবেন না...তা করলে আমার বা হাউসের সম্মান থাকবে না’’। একইসঙ্গে আস্থা ভোট করে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে কুমারস্বামী সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেন স্পিকার। অন্যদিকে, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন, এ খবর ছড়ায় সোমবার। পরে দেখা যায় ওই ইস্তফাপত্রে কুমারস্বামীর সই জাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যসভা আসলে একটা সার্কাস সংস্থা’,বললেন অধ্যক্ষ
এর আগে আস্থা ভোট করার জন্য বেশ কয়েকবার ডেডলাইন বেঁধে দেন খোদ রাজ্যপাল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আস্থা ভোট ঘিরে জট কাটেনি। এদিকে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ নিয়ে আসরে নেমেছে কংগ্রেস-জেডিএস সরকার। এদিকে, সরকার টিকিয়ে রাখতে মরিয়া এইচ ডি কুমারস্বামী। সমস্যা সমাধানে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে বিধায়কদের খোলা চিঠি লেখেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ফেরার আর্জি জানিয়ে কুমারস্বামী বলেছেন, আপনারা বিধানসভায় এসে বলুন, কীভাবে বিজেপি ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাইছে। একইসঙ্গে বিধায়কদের লেখা চিঠিতে কুমারস্বামী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি চেয়ার আঁকড়ে থাকতে চান না।
উল্লেখ্য, কংগ্রেস-জেডিএস সরকারের হাতে রয়েছেন ১১৭ জন বিধায়ক। এঁদের মধ্যে কংগ্রেসের হাতে ৭৮ জন, জেডিএসের ৩৭, বিএসপির হাতে ১ ও আরেকজন মনোনীত। অন্যদিকে, বিরোধী পক্ষ বিজেপির হাতে রয়েছেন ১০৭ জন বিধায়ক। ১৫ জন বিধায়কের ইস্তফা গৃহীত হলে, কুমারস্বামী সরকারের হাতে থাকবেন ১০২ জন বিধায়ক। যার জেরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে ১৪ মাসের কুমারস্বামী সরকার।
Read the Live Blog in English