কর্নাটকের নতুন সরকার গঠন এবং ইয়েদুরাপ্পার শপথ প্রসঙ্গে এবার সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে সরকার গড়তে ডাকায় কর্নাটকের রাজ্যপালকে কার্যত একহাত নিলেন তৃণমূলনেত্রী। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও কেন কংগ্রেস-জেডি(এস) জোটকে সরকার গড়তে রাজ্যপাল ডাকলেন না, সে নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তুললেন মমতা।
গতকাল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কর্নাটকের সব বিজয়ীদেরই অভিনন্দন জানিয়েছি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কেন প্রাধান্য দেওয়া হবে না?’’ তৃণমূল সুপ্রিমো আরও বলেন,‘‘জেডি(এস) ও কংগ্রেস সরকার গড়তে চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছিলেন। ওদের মোট ১১৬জন বিধায়ক রয়েছে, বিজেপির সেখানে ১০৪ জন। জানি না কেন জেডি(এস) প্রধান কুমারস্বামী ও কংগ্রেস নেতৃত্বকে সরকার গড়তে ডাকলেন না রাজ্যপাল।’’ এরপরই রাজ্যপাল ভজুভাই বালার ভূমিকার সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘‘রাজ্যপালের পদটি অত্যন্ত সম্মানজনক, একইসঙ্গে সাংবিধানিক ও। একজন রাজ্যপাল বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলের পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করতে পারেন না।’’ এ প্রসঙ্গে মমতার আরও কটাক্ষ, ‘‘সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দকে একজন রাজ্যপাল গুরুত্ব দিতে পারেন না।’’ তৃণমূলনেত্রীর মতে, এ সিদ্ধান্ত আজ হয়তো কিছু দল মেনে নেবে, কিন্তু আগামী দিনে মানবে না।
আরও পড়ুন, সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়েই কুমারস্বামীকে ফোন মমতার
কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডি(এস)-কে না ডেকে বিজেপিকে সরকার গড়তে ডাকার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী গোয়ার প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, ‘‘কোথাও কোথাও রাজনৈতিক বৈষম্য হচ্ছে। গোয়াতে কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল ছিল, কিন্তু সরকার গড়তে কংগ্রেসকে ডাকা হয়নি। একই ঘটনা ঘটেছে মণিপুরেও।’’ কিন্তু কর্নাটকে এর যে ব্যতিক্রম ঘটেছে, সে প্রসঙ্গে টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে আমরা শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আপনি যদি সংবিধান লঙ্ঘন করেন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি লঙ্ঘন করেন, তবে তার প্রভাব পড়বে সর্বত্র।’’
আরও পড়ুন, কর্নাটকের ঘটনায় অভিজ্ঞ কংগ্রেস-আরজেডি, গোয়া-বিহারে রাজ্যপালদের উপর চাপের রণকৌশল
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে রক্ষা করা উচিত। মায়াবতীজির মতকে সমর্থন করি, স্ট্যালিন, অখিলেশজি, কংগ্রেস, হার্দিক প্যাটেলের মতামতকেও সমর্থন জানাই’’ চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলেও এদিন জানান মমতা। দেশবাসীকে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানান তৃণমূলনেত্রী।
আরও পড়ুন, কর্নাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ইয়েদুরাপ্পা
অন্যদিকে বিধায়ক বেচাকেনার রাজনীতির নিন্দা জানিয়ে এদিন সরব হন মমতা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের বেচাকেনার রাজনীতি দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দেবে।’’ এ ধরনের রাজনীতি চলতে থাকলে দেশের সভ্যতা ও সংবিধান যে বিপজ্জনক হবে সে কথাও বলেন তৃণমূল নেত্রী।