কর্নাটকের রাজনৈতিক সংকটের জল গড়িয়ে গেল আগামী সপ্তাহে। তার আগে শুক্রবার দিনভর টানটান উত্তেজনার আঁচে নজিরবিহীন রাজনৈতিক নাটক দেখল দক্ষিণের ওই রাজ্যটির বিধানসভা। আস্থা ভোট করার জন্য পরপর দু-বার বিধানসভার স্পিকারকে নির্দেশ পাঠালেন রাজ্যপাল। সেই নির্দেশ কার্যত অমান্য করে বিধানসভার অধিবেশন চালিয়ে গেলেন স্পিকার। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করলেন, কেন্দ্রের শাসকদলের চক্রান্তের শরিক হয়ে নির্বাচিত সরকার ফেলে দিতে চাইছেন রাজ্যপাল। আপাতত যা পরিস্থিতি, কর্নাটকের মসনদ কার দখলে থাকবে, তা ঠিক করতে আস্থাভোট হতে পারে আগামী সোমবার।
শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ প্রথমবারের জন্য স্পিকার কে আর রমেশ কুমারকে আস্থা ভোট সেরে ফেলতে নির্দেশ দেন রাজ্যপাল বাজুভাই ভালা। সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে অধিবেশন চালিয়ে যেতে থাকেন স্পিকার। আস্থা ভোটের উপর একের পর কংগ্রেস-জেডিএস বিধায়ক ও মন্ত্রীরা মন্তব্য রাখতে থাকেন। বিকেলে ফের আরেকবার স্পিকারের কাছে রাজ্যপালের কাছ থেকে নির্দেশ আসে। এবার রাজ্যপাল জানান, শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই আস্থা ভোট সেরে ফেলতে হবে। এই নির্দেশটিকেও গুরুত্ব দেননি স্পিকার। আপাতত যা পরিস্থিতি, আস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত আলোচনা সোমবার মিটতে পারে। তারপর ওইদিনই আস্থাভোট হতে পারে।
আরও পড়ুন, মুকুলের মাস্টার স্ট্রোক, বিজেপির অন্দরে ঘুরিয়ে ছক্কা হাঁকালেন ‘চাণক্য’
রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, কর্নাটকে এইচ ডি কুমারস্বামীর সরকারের পতন এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। কারণ, যখনই আস্থা ভোট হোক, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১০৫ জন বিধায়কের সমর্থন কংগ্রেস-জেডিএস জোটের কাছে নেই। শাসকজোটের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০০ জন বিধায়ক রয়েছেন। এই পরিস্থিতিকে বিজেপি-কে বিপাকে ফেলতে নতুন কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। আস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত আলোচনাকে যথাসম্ভব দীর্ঘ করতে চাইছেন তাঁরা। প্রতিদিনই একের পর বিধায়ক ও মন্ত্রী ভাষণ করতে উঠে তুলোধনা করছেন শাসক বিজেপি-কে। কীভাবে তাঁদের সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য বিপুল অর্থের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে, তার বিস্তারিত বিবরণ দিচ্ছেন তাঁরা। বিজেপি বিধায়কেরা এর বিরোধিতা করতে পারছেন না, কারণ সেক্ষেত্রে আরও পিছিয়ে যাবে আস্থা ভোট।
এদিনই এই প্রশ্নে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। তিনি বলেন," বিধানসভা কীভাবে পরিচালিত হবে, তা কি রাজ্যপাল ঠিক করে দিতে পারেন! ওঁর এত ব্যস্ততার কারণ কী! যথাসময়েই আস্থা ভোট হবে।" কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়ার অভিযোগ, রাজ্যপাল বিজেপি-র নির্দেশ পরিচালিত হচ্ছেন।
বিজেপি-র অবশ্য দাবি, কবে আস্থা ভোট হবে তা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত নন। কারণ অধিকাংশ বিধায়কের সমর্থন তাঁদের সঙ্গেই রয়েছে। টাকা দিয়ে বিধায়ক কেনার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর কথায়, "নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের ব্যক্তিত্বের আকর্ষণেই দল ছাড়ছেন কংগ্রেস, জেডিএস বিধায়কেরা।"
Read the full story in English