নজির বিহীনভাবে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছে কেরালা বিধানসভায়। শাসক বিরোধী একযোগে প্রস্তাবেব পক্ষে ভোট দিয়েছে। যা সংবিধান বিরোধী বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ নিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। এদিকে, বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ জেভিএল নরসিমা রাও চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে চিঠি দিয়ে, আইন অবমাননার কার্যক্রম শুরুর আবেদন জানিয়েছেন। বিষয়টি প্রিভিলেজ কমিটির বৈঠকেও তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার প্রস্তাবনা পাস হয় কেরালা বিধানসভায়। প্রস্তাবনার পক্ষে ভোট দেন শাসক এলডিএফ ও বিরোধী ইউডিএফ। কেরালা বিধানসভায় রয়েছেন মাত্র ১ জন বিজেপি বিধায়ক। একমাত্র সেই প্রস্তাবনার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। নয়া নাগরিকত্ব আইনকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘সংবিধানের ধর্ম নিরপেক্ষ’ ধারার বিরোধী বলে দাবি করে বিরোধিদের। কংগ্রেসের প্রস্তাব মেনেই বাম সরকার কেরালা বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় সিপিএমের পাশে বিরোধীরা, কেরলে পাস সিএএ বিরোধী প্রস্তাব
এরপরই কেরালা বিধানসভার প্রস্তাবনা পাসকে 'সংবিধান বিরোধী' বলে বর্ণনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তাঁর কথায়, 'বেশ কিছু গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল অপ্রচার চালাচ্ছে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই যে, প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ নিন।' তাঁর দাবি, 'নয়া আইনে কোনও ভারতবাসীর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। উল্টে, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, আফগানিস্থান ও পাকিস্তান থেকে এদেসে আসা অ-মুসলমান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। তাই কারোর কোনও ভয় নেই।
বিজেপি সাংসদ, জেভিএল নরসিমা রাও বলেন, 'সংসদের উভয়কক্ষেই ক্যাব পাস হয়েছে। পরে রাষ্ট্রপতি তাতে সম্মতি দেওয়ায় বিলটি সিএএ-তে পরিণত হয়। তাই সংবিধান বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে আইন হয়েছে তাকে বিরোধীতা করার ক্ষমতা রাজ্য বিধানসভার নেই। তাই এই প্রস্তাব পাস বে-আইনি।' এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করেন রাজ্যসবার এই সাংসদ।
আরও পড়ুন: কেরালায় ডিটেনশন ক্যাম্প নির্মাণ বন্ধ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
মঙ্গলবারই কেরালা বিধানসভায় পাস হয় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব। বিধানসভার বিতর্ক ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজায়ন বলেন, ‘সিএএ ভারতীয় সংবিধানের মূল্যবোধ ও মূলনীতির পরিপন্থী। নয়া আইন দেশবাসীর মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে। যা বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত ওই আইন প্রত্যাহার করা।’ তাঁর সংযোজন, ‘ সিএএ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের মাথা হেঁট করে দিচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও একবার স্পষ্ট করে জানিয়েছে দেন কেরালায় কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না।
কেরালার বিরোধী দলনেতা চেন্নিথালা সিএএ প্রত্য়াহারের প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘ভারতকে ধর্ম-নিয়ন্ত্রিত দেশ বানাতে মরিয়া বিজেপি। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। কেন্দ্র বলছে এনপিআর করবে এনআরসির প্রথম ধাপ হিসাবে। তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা জনগণনার বিরোধী নই। তবে, যে প্রশ্নমালা তার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।’
Read the full story in English