ভোট দিতে যাওয়ার সময় সংখ্যালঘু মহিলাদের নিকাব (চোখের ওপর আবরণ থাকে না এমন বোরখা) খুলে আসতে হবে বলে দাবি করলেন কেরালার এক সিপিএম নেতা। তাঁর ওই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিরোধী কংগ্রেসের অভিযোগ, সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বুঝেই এমন মন্তব্য করেছেন ওই বাম নেতা।
কেরালার কান্নুর এবং কাসারাগোড় কেন্দ্রের সাতটি বুথে এদিন পুর্ননির্বাচন চলছে। গত ২৩ এপ্রিল ওই কেন্দ্রে নির্বাচন হলেও কিছু বুথে ভুয়ো ভোটের অভিযোগ ওঠায় পুর্ননির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কান্নুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক এম ভি জয়রাজন সম্প্রতি একটি সভায় দাবি করেন, যে মহিলারা নিকাব-সহ ভোটকেন্দ্রে যাবেন, তাঁদের ভোট দিতে দেওয়া উচিত নয়। তাঁর অভিযোগ, নিকাব পরে বুথে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য ছাপ্পা ভোট দেওয়া।
আরও পড়ুন: কর্ণাটক বিধায়কের বাসভবনের সামনে বিস্ফোরণ, মৃত ১
নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে গত শুক্রবার কান্নুরের একটি সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন জয়রাজন। সেখানে তিনি বলেন, "যে মহিলারা নিকাব পরে বুথে যাবেন, তাঁদের উচিত ভোট দেওয়ার আগে নিকাব খুলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো, যাতে তাঁদের মুখ স্পষ্টভাবে রেকর্ড করা যায়।"
জেলা সম্পাদকের এহেন মন্তব্যের জেরে কান্নুরে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম। প্রসঙ্গত, ওই আসনে ভাল সংখ্যক মুসলিম ভোট রয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে বিবৃতি দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণন। তিনি বলেছেন, "নিকাব পরে ভোটকেন্দ্রে আসার মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। এটি মহিলাদের পোশাকের অঙ্গ এবং তাঁরা তা পরতেই পারেন। কেবলমাত্র বুথে উপস্থিত কোনও রাজনৈতিক দলের এজেন্ট যদি সংশ্লিষ্ট ভোটারের মুখ দেখতে চান, তাহলে নিকাব খুলতে হবে।"
নিকাব ইস্যুতে সিপিএমের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী কংগ্রেস। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালার অভিযোগ, সিপিএম নেতার মন্তব্য অত্যন্ত আপত্তিকর। তাঁর কথায়, "সংখ্যালঘু সমাজ সিপিএম-কে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছে। সংখ্যালঘু ভোট হারানোর অস্বস্তির জেরেই এমন মন্তব্য করেছেন জয়রাজন।" অন্যদিকে, কেরলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক টিকা রাম মিনা জানিয়েছেন, নিকাব পরিহিত ভোটারদের পরিচয় যাচাই করার জন্য বুথে একজন মহিলা আধিকারিক থাকবেন।