Advertisment

খড়গপুরে ঐতিহাসিক জয় তৃণমূলের, প্রশ্নের মুখে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্ব

৬ মাস আগে লোকসভা নির্বাচনেও দিলীপ ঘোষ খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪৫ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু, সেই এগিয়ে থাকা আর বজায় রইল না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
TMC Kharagpur

খড়্গপুরে নির্বাচনী প্রচার তৃণমূল কংগ্রেসের। ফাইল ছবি

শেষমেশ খড়্গপুর কেন্দ্রেও জয় হাসিল করল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রার্থী নিয়ে প্রথম থেকেই অল্প বিস্তর অখুশি থাকলেও ভোট প্রচারে খড়্গপুরে বিজেপি ও কংগ্রেসকে প্রথম থেকেই টেক্কা দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে দলের অন্দরে তীব্র অসন্তোষ ছিল। দলের প্রবীণ নেতাদের একটা বড় অংশ মানতে পারেননি বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝাকে। বরং কংগ্রেস তথা জোট প্রার্থীকে নিয়ে সাধারণের মধ্য়ে একটা আগ্রহ ছিল।

Advertisment

খড়্গপুরে এবার বিজেপি সাংসদ ও রাজ্য় সভাপতি তথা ওই কেন্দ্রের বিদায়ী বিধায়ক দিলীপ ঘোষের সম্মানের লড়াই ছিল। আর সেই লড়াইতে একেবারে হেরে গেলেন দিলীপ ঘোষ। নির্বাচনের দিন নিজে এমএলএ বাংলোতে থেকে ভোট পরিচালনা করেছেন। তবুও হাকতে হল দলকে, ফলে তাঁর নেতৃত্ব প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূল না এনআরসি-র কাছে হেরে গেলাম’

খড়্গপুরে প্রথমে তিনজন বিজেপির হয়ে প্রার্থীপদ দাখিল করেছিলেন। তাঁদের মধ্য়ে দু'জন লড়াইতে থেকে যান। প্রার্থী নিয়ে দলের অভ্য়ন্তরে তীব্র অসন্তোষও প্রকাশ্য়ে চলে আসে। শেষ পর্যন্ত দলের জাতীয় কর্মসমিতির দীর্ঘ কালের সদস্য় প্রদীপ পট্টনায়ক নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াইতে থেকে যান। তিনি দাঁড়ানোয় ভোট কাটার থেকে বড় বিষয় হয়ে দাড়ায় গেরুয়া জনতার ভাবাবেগ। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিজেপির জন্মলগ্ন থেকেই খড়্গপুরে দলের বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন প্রদীপ পট্টনায়ক। প্রদীপবাবু বহুবার দলের হয়ে প্রার্থীও হয়েছেন। অথচ সেই তিনিই দলীয় প্রার্থীপদ না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ায় বেআব্রু হয়ে গিয়েছে বিজেপির অন্তর্কলহ। এর পাশাপাশি বাম-কংগ্রেস প্রার্থীও ভোট কেটেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। আর এসবের ফলেই 'ঐতিহাসিক জয়' হাসিল করতে পেরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। কারণ, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে কালিয়াগঞ্জের মতোই এই কেন্দ্রেও এবারই প্রথম জয় পেল ঘাসফুল প্রতীক।

আরও পড়ুন: বিজেপির ঔদ্ধত্যের রাজনীতি পরাজিত হয়েছে: ‘বিজয়িনী’ মমতা

খড়্গপুর শহর 'মিনি ইন্ডিয়া' নামে পরিচিত। সেই 'ক্ষুদ্র ভারতে' বাঙালীরা সংখ্য়ালঘু। এখানে অবাঙালী ভোটার রয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ। এর মধ্য়ে যেমন তেলেগু ভোটাররা রয়েছেন, তেমনই হিন্দীভাষী ভোটারও রয়েছে বিপুল সংখ্য়ক। সেই ভোটাররা একটা দীর্ঘ সময় ধরে কংগ্রেসকে জিতিয়ে এসেছেন এবং কার্যত প্রবাদপ্রতিম হয়েছিলেন 'চাচা' জ্ঞানসিং সোহন পাল। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরাই আবার দিলীপ ঘোষকে বিধায়ক নির্বাচিত করেন। শুধু তাই নয় ৬ মাস আগে লোকসভা নির্বাচনেও দিলীপ ঘোষ খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪৫ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু, সেই এগিয়ে থাকা আর বজায় রইল না। বরং বিজেপির জয়ের ব্যবধান নিশ্চিহ্ন করে উল্টে ২০ হাজার ৮১১ ভোটে ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। অবাঙালী প্রধান কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের এই জয়কে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষ তাত্ৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

tmc bjp bypoll
Advertisment