দীর্ঘ দুই দশক পর অ-গান্ধি সভাপতি পেল জাতীয় কংগ্রেস। থারুর কে হারিয়ে কুর্সিতে খাড়গে। গণনা শেষে খাড়গে মোট ৯৩৮৫টি ভোটের মধ্যে ৭,৮৯৭ ভোট পেয়ে, তার প্রতিপক্ষ শশী থারুরকে পরাজিত করেছেন। শশী থারুর পেয়েছেন মাত্র ১,০৭২ টি ভোট। খাড়গে অন্তর্বর্তীকালীন কংগ্রেস সভেনেত্রী সোনিয়া গান্ধীর স্থলাভিষিক্ত হবেন, যিনি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করার পর থেকে এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে মল্লিকার্জুন খাড়গের জয়ের পরে দিল্লিতে কংগ্রেস সদর দফতরের বাইরে রীতিমত উৎসবের মেজাজ।
আজ সকাল ১০টায় কংগ্রেস সদর দফতরে ভোট গণনা শুরু হয়। দলের সভাপতি পদে মল্লিকার্জুন খাড়গে ও শশী থারুরের মধ্যে কে হবেন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি তা নিয়েই কর্মী-সর্মথকদের মধ্যে চলেছে জোর জল্পনা। কংগ্রেস সভাপতি পদে যোগ্য ব্যক্তি লড়াই বহুদিন ধরেই চলছে। গান্ধী পরিবারের বাইরে দলের সভাপতি নির্বাচন আয়োজনেও দীর্ঘ সময় লেগেছে। অবশেষে শশী থারুরকে হারিয়ে দলের সভাপতির মুকুট জিতে নিলেন দলের অন্যতম প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।
এদিকে জয়ের পর তাঁর বাড়ির বাইরে অসংখ্য কর্মী সমর্থকের ভিড় চোখে পড়ে। পৌঁছেছেন শচীন পাইলট, গৌরব গগৈ, তারিক আনোয়ার সহ দলের সিনিয়ার নেতারা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী দলে তাঁর ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, 'আমি কংগ্রেস সভাপতির ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। আমার ভূমিকা কী হবে তা মল্লিকার্জুন খাড়গেই ঠিক করবেন'। খাড়গেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শশী থারুরও। তিনি বলেছেন, "জাতীয় কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি হওয়া অত্যন্ত সম্মানের বিষয়"।
ভোট গণনা শুরু হওয়ার পরই ট্যুইট করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তিনি টুইট বার্তায় বলেন, " যারা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে আমাদের রাজনীতির উন্নয়নে একটি মাইলফলক তৈরি করতে অবদান রেখেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই"। এদিকে হারের পরেই শশী থারুর এক বিবৃতিতে বলেন, " দলের সভাপতি হওয়া একটি বড় সম্মানের পাশাপাশি একটি বড় দায়িত্ব। ভারত জুড়ে কংগ্রেসের অনেক শুভানুধ্যায়ীর আশা ও আকাঙ্খাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া একটি কঠিন কাজ। প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের ওপর দলের নেতা-কর্মীরা সেই দায়িত্ব দিয়েছেন। আশা রাখি উনি সেই দায়িত্ব যথাযথ পালন করবেন"।
জাতীয় কংগ্রেস ১৩৭ বছরের ইতিহাসে ষষ্ঠবারের জন্য সভাপতি পদে নির্বাচন গত সোমবারই অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে দলের সভাপতি পদের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৩৯, ১৯৫০, ১৯৭৭, ১৯৯৭ এবং ২০০০ সালে। পুরো ২২ বছর পর দলের সভাপতি পদের নির্বাচন ঘিরে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মত। এই নির্বাচনে দীর্ঘ ২৪ বছর পর, গান্ধী পরিবারের বাইরের দলের অন্যতম সিনিয়ার নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে দলের সভাপতি নির্বাচিত হলেন।
এর আগে সীতারাম কেশরী ছিলেন গান্ধী পরিবারের বাইরের দলের সভাপতি। নির্বাচনে জেতার আগেই খাড়গে এক বিবৃতিতে বলেন, "সভাপতির কুর্সিতে বলে দলের বিষয়ে গান্ধী পরিবারের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিতে তাঁর কোনও দ্বিধা-দ্বন্ধ থাকবে না, কারণ সেই পরিবার অনেক লড়াই করেছে এবং অবদান রেখেছে। দলের উন্নয়নে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে গান্ধী পরিবার। ২৪ বছর পর এই প্রথম কংগ্রেস সভাপতির কুর্সিতে অ-গান্ধী পরিবারের কোন নেতা। সোমবার, সভাপতি পদের নির্বাচনে কংগ্রেসের ৯ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি ভোট দিয়েছেন।