আজই বিধাননগরের নতুন মেয়র হলেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারপার্সন পদে ছিলেন কৃষ্ণা। মেয়র পদ থেকে সব্যসাচী দত্তের ইস্তফার পরই বিধাননগরের মেয়র কে হবেন, তা নিয়ে রীতিমতো জল্পনা ছড়ায়। শেষপর্যন্ত আশির দশক থেকে মমতার সঙ্গী কৃষ্ণার নামই মেয়র হিসেবে চূড়ান্ত করা হয় বলে কিছুদিন আগেই খবর মেলে। শুক্রবারই মেয়র পদে মনোনয়নপত্র পেশ করেন কৃষ্ণা।শনিবার মেয়র পদে শপথ নেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: পুরনো সৈনিকেই আস্থা মমতার, বিধাননগরের মেয়র হচ্ছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী
এ প্রসঙ্গে বিধাননগর পুরসভার ভাবী মেয়র কৃষ্ণা বলেন, ‘‘দল আমাকে নতুন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। দলের সব কাউন্সিলররা আমায় সমর্থন করেছেন। আমার মনোনয়নপত্র পেশ করেছি। সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব’’।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন ধরেই নিজের দল তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সব্যসাচীর সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল। কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎভবনে সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের বিক্ষোভে অংশ নিয়ে দলেরই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন সব্যসাচী। এরপরই সব্যসাচীকে কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু করে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিধাননগরের মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন ৩৫ জন কাউন্সিলর। অনাস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন সব্যসাচী। সেই মামলায় সব্যসাচীকে স্বস্তি দিয়ে হাইকোর্ট বিধাননগর পুরনিগমে আস্থা ভোট বাতিল করার নির্দেশ দেয়। তার পরের দিনই মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন সব্যসাচী।
আরও পড়ুন: তৃণমূলেই আছি, দল প্রমাণ করল আমার দাবি ন্যায্য ছিল: সব্যসাচী
বিধাননগরের মেয়র পদে কেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী?
রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হল, দলের পুরনো নেতাদের ব্রাত্য করে রাখা। দলের পুরনো সৈনিকদের জায়গা না দেওয়ার ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়। সে কারণেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের পুরনো নেতাদের সামনে এনে দলকে আরও সংঘবদ্ধ করার কৌশল নিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী। আর তাই বিধাননগরের মেয়র পদে বাছা হল কৃষ্ণাকে। উল্লেখ্য, পূর্বতন বিধাননগর পুরসভার মেয়র ছিলেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। পরবর্তীকালে রাজারহাট-গোপালপুর পুরনিগম ভেঙে যখন বিধাননগর পুরনিগম করা হল। সে সময় মেয়র হিসেবে সব্যসাচী দত্তের নাম ঘোষণা করা হয়। রাজনৈতিক সূত্রে খবর, সব্যসাচীর নাম মেয়র হিসেবে ঘোষণার সময় সেদিন কৃষ্ণার চোখে জল দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে, মুকুল ঘনিষ্ঠ সব্যসাচীকে দলে ধরে রাখতে বিধাননগরের মেয়র করার কৌশলী পদক্ষেপ করেছিল মমতার দল। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই সব্যসাচীই দলের ‘কাঁটা’ হয়ে রইল। এদিকে, আশির দশক থেকে দলের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে কাজ করে আসছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। সব্যসাচীকে নিয়ে বিধাননগরে টালবাহানার সময়ও কৃষ্ণা প্রথমে মেয়র হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু পরক্ষণেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘মেয়র হওয়ার ইচ্ছে তাঁর নেই’’। কৃষ্ণা এও বলেছিলেন, ‘‘দল যাঁকে মেয়র করবে, তাঁকেই সকলে মেনে নেবেন’’।
Read the full story in English