চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের মধ্যে অন্যতম নজরকাড়া ছিল নদিয়ার শান্তিপুর। দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশে হিংসার ঘটনা সীমান্তবর্তী এই কেন্দ্রে কতটা প্রভাব ফেলবে? তা নিয়ে ভোটের আগে নানা চর্চা চলেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও প্রচারে দাবি করেছিলেন যে, পার্শ্ববর্তী দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনার পর শান্তিপুরে একুশের ভোটের তুলনায় তিন গুণ বেশি ভোটে জিতবে বিজেপি। কিন্তু, তাত তো হলোই না, উল্টে শান্তিপুর দখল করেছে তৃণমূল। ভোটের ব্যবধানও প্রায় ৬০ হাজারের। এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে 'শকুন অধিকারী' বলে কটাক্ষ করেছেন শাসক দলের এই নেতা।
শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় রাজনীতির অভিযোগ করেছেন কুণাল ঘোষ। শান্তিপুরে শুভেন্দুর দাবি বাস্তবায়িত হয়নি। সোমবার রাজ্যের চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে শুভেন্দু অধিকারীর কোনও প্রতিক্রিয়া সংবাদ মাধ্যমে দেখা যায়নি। কোথায় রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা? কেন তিনি নীরব? প্রশ্ন তুলে কৈফিয়ত দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ।
মঙ্গলর টুইটারে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক লিখেছেন, 'বাংলাদেশে যা হয়েছে, তাতে আমরা শান্তিপুরে অনেক বেশি ভোটে জিতব।"- শুভেন্দু অধিকারী। তা এখন শকুন অধিকারী কোথায়? ধর্ম বেচে ভোট করা কুলাঙ্গার, বেইমান, কাপুরুষ, দলবদলু, ভীতু, মেরুদন্ডহীন, ধান্দাবাজ, ষড়যন্ত্রী, নির্লজ্জ, গিরগিটি, সুবিধেবাদী, গদ্দারটা নীরব কেন? কৈফিয়ত দিক।'
এপারে শান্তিপুরের উপনির্বাচনের এবার ইস্যু হয়ে উঠেছিল ওপার, বাংলাদেশে হিন্দুদের পুজোয় হিংসার ঘটনা। প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলছিলেন যে, 'বাংলাদেশের ঘটনার পর আরও তিনগুণ বেশি ভোটে এই আসনে জিতবে বিজেপি।'
বিরোধী দলনেতার এই দাবি ঘিরে চলে জোর চর্চা। পাল্টা শান্তিপুরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। বলেন, বলেন, 'বাংলাদেশে যা ঘটেছে তাকে ধিক্কার জানাই। কিন্তু, ওরা এটা নিয়ে ধর্মের রাজনীতি করছে। ২৭ মার্চ বাংলার ভোটের সময় বাংলাদেশ গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের সময় যেতে পারলে এখন কেন যাচ্ছেন না? কেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সেখানে পাঠাচ্ছেন না?'
নির্বাচনের সময় মোদীর বাংলাদেশ যাত্রাকে ‘ডিল’ বলে দাবি করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘ওরা এখানে জয় বাংলা বলতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে গেলে বলে জয় বাংলা। ভোটের সময় ওখানে ডিল করে আসবেন, আর ভোটের সময় বাংলায় এসে বিভাজনের তাল খেলে জয়ের স্বপ্ন দেখবেন। তার পরিণতি কি, এখন বিজেপি টের পেয়েছে। মুখে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন আর প্রধানমন্ত্রী, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন না।’
উল্লেখ্য, শান্তিপুরের উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৫৫ শতাংশ। বিজেপি পেয়েছে ২৩ শতাংশ। না জিতলেও একুশের তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছে সিপিআইএম। বাম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট প্রায় ১৯ শতাংশ। একা লড়ে একদা গড়েই ধরাশায়ী কংগ্রেস।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন