দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৃণমূলের পুরভোট সংক্রান্ত কোঅর্ডিনেটর বদল হল। মন্ত্রী অরূপ রায়ের জায়গায় এলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ সওকত মোল্লা ও কুণাল ঘোষ। এই বদল নিয়ে শাসক শিবিরের অন্দরে জোর গুঞ্জন। অরূপ রায়কে পূর্ব বর্ধমানে কোঅর্ডিনেটরের কাজ করতে বলা হয়েছে।
কেন হঠাৎ দঃ ২৪ পরগনার জন্য কোঅর্ডিনেটর বদল? তৃণমূল সূত্রে খবর, তৃণমূলের পুরপ্রার্থী তালিকা নিয়ে শুরু থেকেই বিভ্রাট লক্ষ্য করা গিয়েছে। প্রথমে ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ করা হয়। যা নিয়ে রাজ্যের বহু পুরসভায় জোড়া-ফুল নেতা, কর্মীদের বিক্ষোভ দানা বাঁধে। এরপরই গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আরও একটি তালিকা দলীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে তৃণমূল। যেখানে দলের মহাসচি পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সাক্ষর ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা নিয়েও বিক্ষোভ, অসন্তোষ নজরে পড়ে। দলের বিড়ম্বনার মধ্যেই তৃণমূল সুপ্রিমো গত সোমবার লখনউ যাওয়ার আগে সাফ জানিয়েদেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সির সই করা লিস্টই ফাইনাল।'
খবর মেলে, নেত্রীর ঘোষণার পরও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ও বজবজ পুরসভায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে গড়মিল রয়েছে। তালিকার প্রথমটিতে যেসব ব্যক্তিদের নাম ছিল তাঁরা মনোনয়ন দাখিল করতে মরিয়া। দ্বিতীয় তালিকায় নাম থাকা অর্থাৎ যাঁদের তৃণমূল দলীয় প্রার্থী বলে অনুমোদন করেছে, তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে ভয় পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন- মনোনয়ন জমার শেষ দিনেই বাজিমাত, দুই পুরসভায় বিনা লড়াইয়ে ‘জয়’ তৃণমূলের
জানা গিয়েছে, এরপরই বুধবার তৃণমূল মহাসচিব ও দলের রাজ্য সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন তাঁর অনুমোদনপ্রাপ্ত তালিকা মানা হচ্ছে না তা জানতে চান। শেষে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোঅর্ডিনেটরের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় কুণাল ঘোষ ও সওকত মোল্লাকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী। কিন্তু সংগঠনে নজরদারি রয়েছেন খোদ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যেয়র। ওই জেলার ডায়মন্ড হারবারের সাংসদও তিনি। ফলে মমতা ঘনিষ্ঠ অরূপ রায়কে সরিয়ে অভিষেকের কাছের বলে পরিচিত সওকত মোল্লা ও কুণাল ঘোষকে কোঅর্ডিনেটরের মত দায়িত্বপূর্ণ পদে আনার বিষয়টি তৃণমূলে নেতৃত্বের সংঘাতের নানা জল্পনার মাঝে তাৎপর্যপূর্ণ।
অন্যদিকে, দলীয় প্রার্থী ছাড়া কারা কোন জেলায় নির্দল হয়ে মনোনয়ন জমা দিলেন তা জানিয়ে জেলা নেতৃত্বের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নেতারা। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন সব দেখেই এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।