Advertisment

মন্ত্রিত্ব-তৃণমূল ছাড়লেন লক্ষ্মীরতন, সিদ্ধান্তকে স্বাগত মমতার

মন্ত্রিত্ব ও তৃণমূলের সাংগঠনিক পদ ছাড়লেও বিধায়ক পদ থেকে এখনই লক্ষ্মীরতন ইস্তফা দিচ্ছেন না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

মমতা মন্ত্রিসভা থেকে আরও এক মন্ত্রী পদত্যাগ করলেন। এবার মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন লক্ষ্ণীরতন শুক্লা। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করলেন লক্ষ্মীরতন। রাজনীতি থেকে অবসর চেয়ে ইস্তফা দিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুল্কা। লক্ষ্ণীর পদত্যাগপত্র গ্রহণের জন্য রাজ্যপালের কাছে তাঁর ইস্ফাপত্র পাঠানো হয়েছে বলে নবান্নে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisment

শুধু মন্ত্রিত্বই নয়, দলের সাংগঠনিক পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন লক্ষ্মীরতন। হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কিন্তু এদিন সেই পদও ছেড়ে দিয়েছেন প্রাক্তন এই ক্রিকেটার। ফের ক্রিকেটের জঘতে ফিরতেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন হাওড়া উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা।

যদিও মন্ত্রিত্ব ও তৃণমূলের সাংগঠনিক পদ ছাড়লেও বিধায়ক পদ থেকে এখনই লক্ষ্মীরতন ইস্তফা দিচ্ছেন না। মেয়াদ শেষ হওযা পর্যন্ত বিধায়ক পদের দায়িত্ব তিনি সামলাবেন বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা।

এদিন নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্ণীর ইস্তফা প্রসঙ্গে বলেছেন, 'লক্ষ্ণীরতন খুব ভালো ছেলে। পদত্যাগ করতেই পারে। ও মনে করেছে তাই পদত্যাগ করেছে। চিঠিতে ও মন্ত্রিত্ব বা দল বলে আলাদা করে কিছু বলেনি, লিখেছে সব ধরণের রাজনীতি থেকেই অব্যাহতি চাইছে। ফের খেলার জগতে ফিরে যেতেই ওর এই সিদ্ধান্ত। আমরা চাই ও খুব ভালো করে খেলুক। এর মধ্যে নেগেটিভ ভাবার কিছু নেই।'

গত কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্মীর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। তবে জানা গিয়েছে, তিনি দল বদল করছেন না বলেই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। শুভেন্দু অধিকারীর পর বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফা নিঃসন্দেহে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

লক্ষ্মীরতন শুক্লা এখনই অন্য দলে যাচ্ছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়৷ প্রাক্তন ক্রিকেটারের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, আপাতত রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান লক্ষ্মী৷ কিছু বিশ্রাম নেবেন৷ তার পরই নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাবেন তিনি৷

২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়েই বিধানসভা নির্বাচনে হাওড়া উত্তর থেকে ভোটে জয় পান লক্ষ্মীরতন শুক্লা। মমতা মন্ত্রিসভায় ত্রীড়া প্রতিমন্ত্রী  হন তিনি।

হাওড়ায় তৃণমূলের 'বিদ্রোহী'র সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া ইতিমধ্যেই 'বিসুরো'। এবার মন্ত্রিত্ব ও সাংগঠনির গুরুত্বপূর্ণ পদ  থেকে সরে গেলেন লক্ষ্ণীও। জোড়া-ফুলের অন্দরের খবর, রাজবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই লক্ষ্মীরতন শুক্লার সঙ্গেও হাওড়া জেলার চেয়ারম্যান এবং মন্ত্রী অরূপ রায়ের দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছিল৷ ফলে দল ও অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছিল৷

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরূপ রায়৷ লক্ষ্ণীরতনের পদত্যাগ প্রসঙ্গে অরূপ রায় বলেছেন, 'কেন লক্ষ্ণী এই পদক্ষেপ করল তা আমি জানাি না। তবে ভোটের ওঁর পদত্যাগের সময় নির্বাচন ঠিক হয়নি। এতো যুদ্ধের আগে সেনাপতির পদ থকে সরে যাওয়ার মতো বিষয়। প্রশ্ন জাগছে কেন পাঁচ বছর পর এই পদত্যাগ। যদিও লক্ষ্ণীর স্থান অন্য কেই পূরণ করে দেবেন। দলে এর কোনও প্রবাব পড়বে না।'

তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছেন, 'লক্ষ্ণী ভালো ক্রীড়াবিদ। হঠাৎ কেন মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন তা জানা নেই। কি অসুবিধা হচ্ছিল ও জানায়নি। এখন মুখ্যমন্ত্রী সব সিদ্ধান্ত নেবেন।'

বাম-বিজেপি শিবিরের তরফে লক্ষ্ণীরতন শুক্লার ইস্তফা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও মমতা মন্ত্রিসভার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। বিজেপি নেতা শণীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'যে দলের নির্দিষ্ঠ কোনও লক্ষ্য বা আদর্শ নেই সেই দল দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় টিঁকে থাকতে পারে না। সেখানে কাজ করাও সম্ভব নয়। লক্ষ্ণীর ইস্তফা তা চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়ে দেওয়া হল।' বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যের উপর কেউ আর আস্থা রাখতে পারছেন না। একে একে সবাই চলে যাচ্ছে। মমতার যে বিশ্বাসযোগ্যতা সেঠাই তো প্রশ্নের মুখে। মন্ত্রীদের কতজন মমতার প্রতি আস্থা রাখেন সেটাই এখন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েছে।'

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Mamata Banerjee
Advertisment