নবীণ থেকে প্রবীন- দল ছেড়েছেন একের পর এক নেতা। মুখে কুলুপ হাইকমান্ডের। স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেসের অন্দরে সুর চড়ালেন 'বিক্ষুব্ধ'রা। মঙ্গলবারই হাত শিবিরের সঙ্গে প্রায় পাঁচ দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন দলে গান্ধী পরিবারের অনুগত বলে পরিচিত প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার। সেই উদাহরণ টেনেই দলের জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতাদের দাবি, এাধিক শীর্ষস্তরের নেতৃত্বের দলত্যাগের ঘটনাই স্পষ্ট করছে যে কংগ্রেসে সবকিছু ঠিকঠাক নেই।
নেতাদের পর পর কংগ্রেসের ছাড়ার বিষয়টিকে 'গভীর উদ্বেগের' বলে জানিয়েছেন হাত শিবিরের শীর্ষ নেতা গুলাম নবী আজাদ।
২০২০ সালের অগাস্টে কংগ্রেসের অন্দরে বিদ্রোহের সুর চড়েছিল। নেতৃত্বের যোগ্যতা ও দলের কাঠামো বদলের দাবিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিয়েছিলেন ২৩ জন শীর্ষ নেতা। যাঁরা হাত শিবিরে 'বিক্ষুব্ধ' বা 'জি-২৩' গোষ্ঠী বলে পরিচিত। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ্যসভায় কংগ্রেসের উপদলনেতা আনন্দ শর্মা, লোকসভার সাংসদ মণীশ তিওয়ারি। তাঁদের মতে, এখনই দলের গুরুত্বসহকারে ও আন্তরিকভাবে আত্মদর্শন করা প্রয়োজন।
পাঁচ রাজ্যে ভোট চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শতাব্দী প্রাচীন দলের বহু নেতাই মনে করেন যে, নির্বাচনের ফল খারপ হলে ১০ মার্চের পর দলের অন্দরে বিস্ফোরণ হতে পারে।
আরও পড়ুন- ২ বছর পর ক্লাসরুমে ফেরা, কেমন কাটল বাচ্চাদের স্কুলের প্রথম দিন?
দ্য ইঅন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে গুলাম নবী আজাদ বলেছেন, 'একাধিক নেতার দল ছাড়ার বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। দলের সবস্তরের বহু নেতা, কর্মী ছাড়া অশ্বিনী কুমার বোধহয় চতুর্থ বা পঞ্চম প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী যিনি কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন।' কংগ্রেস কার্যকরি সমিতির সদস্য আজাদের দাবি, 'কেন এই দলত্যাগ বাড়ছে, তা খতিয়ে দেখতে আত্মসমীক্ষার খুব প্রয়োজন। পুরটাই সমষ্টিগতভাবে উদ্বেগের।'
মণীশ তিওয়ারি বলেছেন, 'মনমোহন সিং মন্ত্রিসভায় অশ্বিনী কুমার ও আমি মন্ত্রী ছিলাম। মতপার্থক্য ছিল একাধিক বিষয়ে। কিন্তু তাঁর দলত্যাগ খুবই দুর্ভাগ্যের।' দেশের সবচেয়ে পুরনো দলের জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতা তথা হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডার কথায়, 'কুমারের মত পুরনো কর্মীর কংগ্রেস ত্যাগ খুবই বেদনার।'
গুলাম নবী আজাদের মতে, 'ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী কংগ্রেস দেশের স্বার্থে প্রয়োজন। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হবে কীভাবে? তার জন্যই আত্মদর্শনের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কেন বার বার এই অবস্থা হচ্ছে তার গভীরে গিয়ে অনুষদ্ধান প্রয়োজন। অশ্বিনী কুমার বিপ্লবী পরিবারের সন্তান। দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক প্রায় পাঁচ দশকের। তাঁর মতো নেতা দল ছাড়ার বিষয়টিতেই স্পষ্ট যে দলে সবকিছু ঠিক নেই।'
কংগ্রেস হাইকমান্ড অবশ্য দলের শীর্ষ নেতাদের দলত্যাগ নিয়ে মুখ খোলেনি। অশ্বিনী কুমারের কংগ্রেস ত্যাগের পর আবার জল মাপছেন জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতারা। ইঙ্গিত স্পষ্টযে, পাঁচ রাজ্যে দলের ফল খারাপ হলেই ফের সরব হবেন তাঁরা। এক নেতার কথায়, 'শুধু যুব নেতাদের নিয়ে দল চলবে না। বহু প্রবীণ নেতা অসন্তুষ্ট।'
Read in English