বাম-কংগ্রেসের নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার, সেই আন্দোলনে পুলিশের অত্যাচারের অভিযোগ। তার প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টা বাংলা ধর্মঘট। ধর্মঘটেও দিনভর প্রচারে থাকা। স্বভাবতই নির্বাচন ঘোষণার মুখে উজ্জীবিত বাম-কংগ্রেসের জোট। রাজনৈতিক মহলের মতে, বৃহস্পতি ও শুক্রবারের ঘটনায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ঘাসফুল শিবির। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পদ্মশিবিরের।
এখনও বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। আব্বাসউদ্দিনের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রণ্টের সঙ্গে আসন বোঝাপড়া নিয়েও শীর্ষ নেতৃত্বের অপেক্ষায় তারা। ইতিমধ্যে বাম ও কংগ্রেসে ছাত্র-যুবরা নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাজ্য সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জগতপ্রকাশ নাড্ডা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হলেও অমিত শাহই এরাজ্যে দলের নির্বাচনে তদারকি করছেন। অভিজ্ঞমহলের মতে, এমতাবস্থায় ছাত্র-যুবদের ওপর জলকামান ও লাঠিচার্জের ঘটনায় একচেটিয়া প্রচার অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে অমিত শাহর সফর। তারওপর গতকালের ঘটনার জেরে ফের আজ, শুক্রবার বাংলা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মূল লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির, যা নিয়ে একমত রাজনৈতিক মহল। তবে সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে আব্বাসের দলের আসন সমঝোতা হলে একটু বল পাবে তৃতীয় শক্তি। কিন্তু বাম-কংগ্রেসকে উজ্জীবিত করতে নবান্ন অভিযান ও বাংলা ধর্মঘট অনেকটাই অক্সিজেন জুগিয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বিজেপি এর পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা দেখতে পাচ্ছে।
একটা সোজা অংক রাজনীতিকরা কষে থাকেন। বিরোধী ভোট যত ভাগ হবে তত ফায়দা শাসকদলের। তাই নানা গোজ দলও ভোটের আগে মাথাচারা দিয়ে ওঠে। সাধারণত জয়ী দলের প্রাপ্ত মোট ভোট শতাংশের হিসেবে সচরাচর ৫০ শতাংশ হয় না। তৃণমূলের গড় ভোট প্রাপ্তি প্রায় ৪৩ শতাংশ। বাকি ভোট বিরোধীদের মধ্যে যত বেশি ভাগ-বাটোয়ারা হবে তত লাভ তৃণমূল কংগ্রেসের। নিন্দুকেদের বক্তব্য, তাই নির্বাচনের আগে এমন ঘটনা আরও ঘটবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা, গত লোকসভা নির্বাচনে বামেদের একটা বড় অংশের ভোট বিজেপিতে গিয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমোও লোকসভা নির্বাচনের ফলের পর সেই দাবি করেছিলেন। এবার তো শুভেন্দু অধিকারী সরসারি বামেদের প্রশাংসা করে বিজেপিতে ভোট দেওয়ার জন্য সভা-সমাবেশে আবেদন জানাচ্ছেন। লোকসভার নিরিখে বামেদের ভোট বিজেপির ঝুলিতে বাড়বে না কমবে সেই হিসেব-নিকেশ করে যাচ্ছেন ডান-বাম সব দলই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাম-কংগ্রেস প্রচারের আলোয় থাকলে সুবিধা তৃণমূল কংগ্রেসের। অসুবিধায় পড়তে হবে পদ্মশিবিরকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন