তেসরা ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডের সভায় ক্রাউডপুলার হিসেবে কানহাইয়া কুমার এবং শাবানা আজমিকে ডাকা হয়েছে বটে, কিন্তু তার আগে নিজেদের লোক জোগাড় করার দিকটিকে আদৌ উপেক্ষা করতে চাইছে না সিপিএম। বামফ্রন্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, জমায়েতের ব্যাপারে অন্য ফ্রন্ট সদস্যদের ওপর তেমন ভরসা করতে রাজি নয় বড় শরিক।
ব্রিগেডে এবার ৯ লাখ মানুষের জমায়েতের পরিকল্পনা রয়েছে। এই টার্গেটের ৯০ শতাংশই নিজেদের হাতে রেখেছে সিপিএম। তাদের বরাদ্দ ৮ লাখ। কানহাইয়া কুমার আসুন বা না আসুন সিপিআইয়ের জন্য বরাদ্দ ৫০ হাজার মানুষকে জমায়েতের। এর পরের দায়িত্ব অন্য দুই শরিক আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের। এ দুই দলেরই বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারী মন্ত্রিত্ব ছিল, ছিল বেশ কিছু পকেটে যথেষ্ট পরিমাণ সদস্য-সমর্থক। সে কথা মাথায় রেখেই এই দুই দলের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ হাজার জমায়েতের। অন্য ছোট শরিক দলগুলিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার মানুষকে ব্রিগেডে নিয়ে আসার।
বামফ্রন্টের ব্রিগেডে অন্য বাম দলগুলির যোগদান নিয়ে নানারকম কথা শোনা গেলেও, এসইউসিআই(সি)-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই জমায়েতে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ করা হয়নি। দলের তরফ থেকে সৌমেন বসু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন, "এ ধরনের নির্বাচনী জমায়েতে যোগ দিতে আমরা আগ্রহী নই। অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী অ্যাজেন্ডার পার্থক্য আছে।" এবারের লোকসভা নির্বাচনে কারও সঙ্গে জোট করছে না এসইউসিআই। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমরা অন্য ধরনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।" ভোটে কোনও লোকসভা আসন জিতলে কী করবে এসইউসিআই(সি) এ নিয়ে সৌমেনবাবুর বক্তব্য "আকাশকুসুম কল্পনা করতে পারছি না।" এ প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাখ্যা, "এখন রাজনীতিতে যে পরিমাণ শক্তির লড়াই হয়, তাতে ভোট এখন আর মানুষের ইচ্ছার প্রতীক নয়।"
৩ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড নিয়ে আদ্যোপান্ত সিরিয়াস সিপিএম। বিভিন্ন নেতারা জেলায় জেলায় পৌঁছে গেছেন, সভা করছেন, জমায়েতের পরিমাণ বাড়িয়ে দেখিয়ে দিতে চাইছেন তাঁরা এ রাজ্যে এখনও সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাননি। বিশেষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় সারা দেশের বিরোধী দলের প্রায় সকলের উপস্থিতির পর, বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের কাছে এ ব্রিগেড সমাবেশ অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই-ই হয়ে গেছে।