২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বহু বৈঠক করেও কোনও নির্বাচনী জোট বা আসন সমঝোতা হয়নি বামফ্রণ্ট ও কংগ্রেসের মধ্যে। কিন্তু ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেস যে একজোট হয়ে লড়াই করবে সে কথা দু’বছর আগেই ঘোষণা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ব্যারাকপুরে বামেদের সঙ্গে যৌথ শান্তি মিছিলের পর সোমেন মিত্র স্পষ্ট বলেন, “আমি যখন যৌথ লড়াইয়ের কথা বলছি, তখন দলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিয়েই বলছি।”
ভাটপাড়ায় আর বোমা-গুলি নয়, শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বামফ্রণ্ট ও কংগ্রেস যৌথ মিছিল করে। শুক্রবার ব্যারাকপুর স্টেশন থেকে শুরু হয়ে চিড়িয়া মোড়ে এই মিছিল শেষ হয়। মিছিল শেষে ব্যারাকপুরের নগরপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিনের মিছিলে হেঁটেছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, শুভঙ্কর ভট্টাচার্য, সোমেন মিত্ররা। এর আগেও শান্তি মিছিলের দাবিতে যৌথ মিছিল করেছে বামফ্রণ্ট ও কংগ্রেস। পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে এদিন দু’দলই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন- মমতা-সব্যসাচী মুখোমুখি সাক্ষাৎ! কী কথা হল দু’জনের?
সাংবাদিকরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়, ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে আপনারা যৌথ ভাবে লড়াই করতে চাইছেন? সোমেনবাবুর চটজলদি জবাব, “হ্যাঁ নিশ্চয়, নিশ্চয়।” তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “কথা না হলে বললাম কী করে। প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়েছে। আমি যখন বলছি, দলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিয়েই বলছি। সমঝোতা কেমন হবে তা পরে দেখা যাবে। আপনারা শুরুটা তো করতে দিন।” বাম-কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ যে তৃণমূল ও বিজেপি সেকথাও এদিন জানিয়ে দিয়েছেন সোমেন মিত্র।
বামফ্রণ্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও এদিন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “জোট নিয়ে আলোচনা চলছে। ২০২১ আসতে এখনও অনেকটা দেরি রয়েছে। তবে, তৃণমূল ও বিজেপি ছাড়া যে কোনও ধর্ম নিরপেক্ষ দলের সঙ্গেই আমাদের জোট করতে আপত্তি নেই।” সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, “আপাতত বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের অপকর্মের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে হবে যৌথভাবে। এদিনও আমরা পতাকা ছাড়া শান্তির পক্ষে মিছিল করেছি। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কোনও জায়গা নেই।”
আরও পড়ুন- তৃণমূলে ফেরার প্রশ্নই নেই, ভাল লোকেরাই দল ছাড়ছে
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জোট করেছিল বামফ্রণ্ট ও কংগ্রেস। এরপর সেই জোট ভেঙে যায় ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে। কিন্তু রাজ্য়ে বিজেপি ও তৃণমূল ছাড়া বাম-কংগ্রেসের অস্তিত্ব প্রায় বিপন্ন হয়ে যাওয়ায় এই দুই দলের একসঙ্গে লড়াই ‘বাধ্যবাধকতা’ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।