বামেদের ডাকা দু'দিনের ভারত বনধের আজই শেষ দিন। গতকালের পর এদিনও রাজ্যর বিভিন্ন জায়গায় চলে অবরোধ-বিক্ষোভ-মিছিল। শহর কলকাতার পাশাপাশি জেলায়-জেলায় ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব। কোথাও জাতীয় সড়কে গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ, কোথাও আবার ধর্মঘটীদের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন পুলিশকর্মীরা। কাজের দিনে এই ধর্মঘটের জেরে সোমবারের মঙ্গলবারও পথে বেরিয়ে নাকাল সাধারণ মানুষ।
কেন্দ্রের মোদী সরকারের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে সোম ও মঙ্গলবার পরপর দু'দিন ভারত বনধের ডাক দেয় বামেরা। এদিনও ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব রাজ্যজুড়ে। মঙ্গলবার শহর কলকাতার শ্যামবাজারে বনধের সমর্থনে রাস্তায় নেমে চলে বিক্ষোভ, মিছিল। এদিন উত্তর কলকাতার পাইকপাড়ায় বনধের সমর্থনে মিছিল করতে দেখা যায় বাম কর্মী-সমর্থকদের। রাস্তায় বসে চলে স্লোগানিং। ধর্মঘটীদের এই বিক্ষোভের জেরে প্রায় মিনিট কুড়ি অবরুদ্ধ থাকে এই রাস্তা।
অন্যদিকে, দক্ষিণ কলকাতার কসবাতেও এদিন ধর্মঘটের সমর্থনে পথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন বাম কর্মীরা। হালতু সাঁপুইপাড়ায় ধর্মঘটীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। ধর্মঘটীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় পুলিশের। অভিযোগ, মিছিল করে বেরিয়ে রাস্তায় গাড়ি যাতায়াতে বাধা দেয় ধর্মঘটীরা। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। একইভাবে বাঘাযতীন, বেহালাতেও এদিন ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল বেরোয়।
কলকাতা শহর ও তার আশেপাশের এলাকাগুলির পাশাপাশি জেলাগুলিতেও এদিন ধর্মঘটের মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিন কোচবিহারের কাছারি মোড়ে ধর্মঘটের সমর্থনে জমায়েত হয়। অভিযোগ, বাস থামানোর চেষ্টা করেন ধর্মঘটীরা। পুলিশ বাধা দিলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় ধর্মঘটীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ পুলিশ লাঠিচার্জ করে। বেশ কয়েকজন ধর্মঘটীকে আটক করা হয়। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার, ধূপগুড়ির কয়েকটি জায়গাতেও এদিন বনধের সমর্থনে মিছিল, বিক্ষোভ চলে।
এদিকে, বামেদের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে কিছুটা প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে বাঁকুড়ায়। রাঢ় বঙ্গের এই জেলায় এদিন ধর্মঘটের জেরে রাস্তায় বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। কাজের দিনে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের নাকাল হওয়ার তীব্র আশঙ্কা ছিল। যদিও পর্যাপ্ত সংখ্যায় সরকারি বাস পথে নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন- গরু পাচার মামলায় অস্বস্তি বাড়ল অনুব্রতর, ডিভিশন বেঞ্চেও খারিজ ‘রক্ষাকবচ’ আর্জি
অন্যদিকে, মেদিনীপুরের দাসপুরেও এদিন রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন ধর্মঘটীরা। ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের সুলতান নগরে ধর্মঘটের সমর্থনে বেরোয় মিছিল। বেশ কিছুক্ষণ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায় ব্যস্ত এই রাস্তা। রাজ্য সড়কে সারি দিয়ে আটকে পড়ে ছোট-বড় বহু গাড়ি।
সোমবারের পর মঙ্গলবারেও ধর্মঘটের সমর্থনে মিছি, বিক্ষোভ উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। এদিন সকালে বারাসত কলোনি মোড় অবরোধ করেন বাম ছাত্র যুব সংগঠনের কর্মীরা। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। তবে পুলিশি তৎপরতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই অবরোধাকীরের সরিয়ে দেওয়া হয়। ফের স্বাভাবিক হয় গাড়ি চলাচল।
এরই পাশাপাশি ধর্মঘটের শেষ দিনে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরেও এদিন চলে অবরোধ-বিক্ষোভ। সকালে দিঘা যাওয়ার ১১৬-র বি জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় অবরোধের জেরে সারি দিয়ে আটকে পড়ে শ'য়ে শ'য়ে গাড়ি। যদিও পুলিশি তৎপরতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।